পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, দেশটির বর্তমান জোট সরকারের শরিক দলগুলো আতঙ্কে ছিল যে তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফাইজ হামিদকে পরবর্তী সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দিতে পারেন। স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার তিনি এ কথা বলেন। খবর জিও নিউজের।
‘সরকার পরিবর্তনে ষড়যন্ত্র ও পাকিস্তানের অস্থিতিশীলতা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য দেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘আমি ফাইজকে সেনাপ্রধান নিয়োগ দিতে চেয়েছিলাম, তারা সেই আতঙ্কে ভুগছিল। তাদের ভয় ছিল যদি এমনটা হয়, সেটা তাদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দেবে।’
ক্ষমতাচ্যুত এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান শাসকেরা সেনাবাহিনী ও সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার-সার্ভিস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) ভয়ে আছে। কারণ, তারা জানে তাদের দুর্নীতি একটা সময় ধরা হবে।
পিটিআই চেয়ারম্যান বলেন, ‘ইমরান খান তার নিজের দুর্নীতি রক্ষা করতে চায় না, সে নিজের সেনাপ্রধান নিয়োগ দিতে চায় না।’
পছন্দের সেনাপ্রধান নিয়োগ নিয়ে ক্ষমতাসীনদের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কাউকে সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার চিন্তা আমি কখনো করিনি। যোগ্যতা বিবেচনার বাইরে আমি কখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি।’
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ধ্বংস ও প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে নিজেদের লোক নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ এনে সরকারের কড়া সমালোচনা করেন তিনি।
সরকার পরিবর্তনের ষড়যন্ত্র প্রসঙ্গে ইমরান খান বলেন, কোনো দেশের ভালোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকার পরিবর্তন করে না। এটা তারা করে নিজেদের স্বার্থে আমাদের স্বার্থে নয়।
তিনি বলেন, অতীতে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে’ পাকিস্তানকে ব্যবহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। পাকিস্তানের বিমান ঘাঁটি ড্রোন হামলার জন্য ব্যবহার করেছিল। এ জন্য ইসলামাবাদকে অনেক মাশুল দিতে হয়েছে।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের স্বার্থ হলো- আমাদের ভূখণ্ড আফগানিস্তান বা অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হয় না। যুক্তরাষ্ট্র চায় আমরা ভারতের দাবি মেনে নিই। দেশটি চায় আমরা কাশ্মীরকে ভুলে যাই এবং ইসরায়েলকে গ্রহণ করি।’
ইমরান খান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু পাকিস্তানকে ‘আগ্রাসীভাবে হুমকি দিয়েছিলেন’। একটি সার্বভৌম দেশ কীভাবে এমন হুমকি মেনে নিতে পারে?
গত ৯ এপ্রিল পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হন ইমরান খান। তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করার নেপথ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ষড়যন্ত্র ছিল বলে অভিযোগ তাঁর। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও বর্তমান ক্ষমতাসীন জোট ইমরান খানের এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।