পাকিস্তানে পেট্রল ও ডিজেলের দাম আরও ৩০ রুপি বাড়ানো হয়েছে। অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল গতকাল বৃহস্পতিবার এ ঘোষণা দিয়েছেন। মধ্যরাত থেকেই নতুন দাম কার্যকর হয়েছে। মাত্র এক সপ্তাহ আগে জ্বালানি তেলের দাম একই পরিমাণ বাড়ানো হয়েছিল। খবর ডনের।
সর্বশেষ বর্ধিত মূল্য অনুযায়ী, প্রতি লিটার পেট্রলের দাম দাঁড়িয়েছে ২০৯ দশমিক ৪৬ রুপি। ডিজেলের লিটারপ্রতি দাম হবে ২০৪ দশমিক ১৫ রুপি। কেরোসিন বিক্রি হবে প্রতি লিটার ১৮১ দশমিক ৯৪ রুপিতে। অবশ্য কেরোসিনের দাম ৩০ রুপির কম বেড়েছে।
ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘৩০ রুপি দাম বাড়ানোর পরও প্রতি লিটার পেট্রলে এখনো ৯ রুপি ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার। আমরা জ্বালানি তেল থেকে কোনো ধরনের শুল্ক নিচ্ছি না।’
মিফতাহ ইসমাইল বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে সরকার প্রতিদিনই কথা বলছে। তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের সব শর্ত পূরণ করতে পারছি না। তবে কিছু সুনির্দিষ্ট বিষয় আমাদের মেনে নিতে হচ্ছে।’
অবশ্য অর্থমন্ত্রী বলেছেন, সারা দেশে প্রতি কেজি চিনি ৭০ রুপি এবং প্রতি কেজি আটা ৪০ রুপিতে বিক্রির বিষয়টি নিশ্চিত করবে সরকার। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আর্থিক ক্ষতি এড়াতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জ্বালানি তেলে যে ভর্তুকি ঘোষণা করেছেন, তা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। তিনি বলেন, ‘আইএমএফের শর্ত বাদ দিলেও, সরকার এত লোকসানে পেট্রল ও ডিজেল বিক্রি করতে পারে না।’
সরকার রাশিয়া থেকে সস্তায় তেল আমদানিতে ইচ্ছুক বলেও জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, এ জন্য কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে না।
এমন সময় আবার জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হলো, যখন অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্যাকেজ নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি সরকার ও আইএমএফ। মূলত জ্বালানি ও বিদ্যুতের ভর্তুকি নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতা এবং পরবর্তী বছরের বাজেটে সংস্কার নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
এদিকে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি করায় সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন বিরোধী দলের নেতারা। তাঁদের অভিযোগ, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় হিমশিম খাচ্ছে সরকার।
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান জনগণকে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। জুমার নামাজের পর সরকারের জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির এই গণবিরোধী নীতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ প্রদর্শনের আহ্বান জানান তিনি।