পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। প্রস্তাবটি ওঠার পরপরই ৩১ মার্চ পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করেন পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। ওই দিন প্রস্তাবের ওপর বিতর্ক শুরু হবে।
পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পার্লামেন্টে ইমরানের বিরুদ্ধে প্রস্তাবটি পেশ করেন পাকিস্তান মুসলিম লিগের (নওয়াজ) নেতা শাহবাজ শরিফ। এর আগে প্রস্তাবটি আদৌ পেশ করা যাবে কি না তা নিয়ে ভোটাভুটি হয়। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের নিয়ম অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করতে পরিষদের কমপক্ষে ২০ শতাংশ সদস্যের সমর্থনের প্রয়োজন হয়।
পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে সদস্য সংখ্যা ৩৪২। অনাস্থা প্রস্তাব পেশের জন্য ৬৮ জন সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন ছিল। প্রস্তাব পেশের পক্ষে ভোট দেন ১৬১ জন আইনপ্রণেতা। এরপর শাহবাজ শরিফ প্রস্তাবটি পড়ে শোনান।
বিরোধীদলীয় এই নেতা বলেন, এই প্রস্তাবের মাধ্যমে পাকিস্তান ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৫–এর ১ ধারার অধীন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ এটাই স্থির করেছে যে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নিয়াজির ওপর এই কক্ষের কোনো আস্থা নেই। ফলে একই অনুচ্ছেদের ৪ ধারার অধীন তিনি তাঁর পদ থেকে সরে যাবেন।
পার্লামেন্টে প্রস্তাব পেশের পরই ৩১ মার্চ বিকেল ৪টা পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করেন ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান। ওই দিন প্রস্তাবের ওপর বিতর্ক শুরু হবে বলে ঘোষণা দেন তিনি।
৮ মার্চ ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পার্লামেন্টে জমা দেওয়া হয়। বিরোধীদের দাবি, পার্লামেন্টের বেশির ভাগ সদস্য ইমরানের বিপক্ষে ভোট দেবেন। সরকার পতনের হুমকির মুখে গতকাল রোববার রাজধানী ইসলামাবাদে জনসভার আয়োজন করে ক্ষমতাসীন তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। সেখানে ইমরান খান বলেন, বিদেশি অর্থ ব্যবহার করে পাকিস্তানে সরকার পরিবর্তনের চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী উসমান বুজদার আজ ইমরান খানের কাছে তাঁর পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। প্রদেশটির নতুন মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে পাকিস্তান মুসলিম লিগ (কায়েদে আজম) নেতা পারভেজ এলাহির নাম ঘোষণা করেছে ক্ষমতাসীন পিটিআই।
এর আগে সকালে পাঞ্জাবের প্রাদেশিক পরিষদে বুজদারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেয় বিরোধী দলগুলো। প্রাদেশিক পরিষদের এক বিবৃতিতে বলা হয়, অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেছেন ১২৭ জন আইনপ্রণেতা। আর এ নিয়ে আলোচনা শুরুর জন্য স্পিকারকে লেখা আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করেছেন ১২০ জন আইনপ্রণেতা।