প্রয়োজনে নিজের গায়ের জামা বিক্রি করে জনগণকে সবচেয়ে কম দামে আটা সরবরাহের অঙ্গীকার করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির কারণে দেশটিতে আটাসহ নিত্যপণ্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। খবর ডনের।
খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে (চিফ মিনিস্টার) পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১০ কেজির আটার বস্তার দাম ৪০০ রুপিতে নামিয়ে আনার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। অন্যথায় তিনি নিজেই কাজটি করবেন বলে ঘোষণা দেন।
গতকাল রোববার খাইবার পাখতুনখাওয়ার মনসেহরা শহরের থাকারা স্টেডিয়ামে এক জনসভায় ভাষণ দেওয়ার সময় শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘আমার দেওয়া প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছি, আমি আমার জামা বিক্রি করে দেব। জনগণকে সবচেয়ে কম দামে আটা সরবরাহ করব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ভগ্নহৃদয়ে জ্বালানি পণ্যের দাম বাড়িয়েছেন। তবে ২৮ বিলিয়ন রুপির ভর্তুকি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে জানিয়ে শাহবাজ বলেন, এখান থেকে দরিদ্রদের প্রতি মাসে দুই হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।
শাহবাজ বলেন, ‘প্রকাশ্যে সবাইকে হেয় করা ইমরান খান এমন সময় জ্বালানি পণ্যের দাম কমিয়েছিলেন, যখন সারা বিশ্বে দাম বাড়ছিল। অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করা হবে বুঝতে পেরে ইমরান এ কাজ করেছেন।’
এ সময় শাহবাজ শরিফ বলেন, ইমরান খানের ‘হাকিকি আজাদি মার্চ’ জনগণের সহানুভূতি অর্জনের ব্যর্থ রাজনৈতিক ধাপ্পাবাজি। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ৫০ লাখ ঘর করে দেওয়ার এবং ১ কোটি মানুষকে চাকরি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরিবর্তে দেশকে এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি ও বেকারত্ব উপহার দিয়েছেন।
সমাবেশে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে শাহবাজ বলেন, ‘আমি অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে আপনাদের সামনে ঘোষণা করছি, আমি আমার জীবন বিলিয়ে দেব, তবুও দেশকে সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের পথে রেখে যাব।’
বৈদেশিক ঋণে জর্জর পাকিস্তানের অর্থনীতিতে সংকট চলছে। এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দ্বারস্থ হয়েছে দেশটির সরকার।
আইএমএফের ঋণ পেতে শর্ত হিসেবে জ্বালানির ওপর ভর্তুকি তুলে নেওয়া হয়। এতে এক ধাক্কায় পেট্রল ও ডিজেলের দাম ৩০ রুপি বেড়ে যায়।
জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব যাতে দরিদ্র পরিবারগুলোর ওপর না পড়ে, সে জন্য ২৮ বিলিয়ন রুপির একটি তহবিল ঘোষণা করেছে সরকার। ‘সস্তা পেট্রল ও সস্তা ডিজেল’ কর্মসূচির আওতায় সরকার ৪০ হাজার রুপির কম আয়ের পরিবারগুলোকে এককালীন দুই হাজার রুপি করে দেবে।