পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন
পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন

তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন সম্ভব নয়: পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন

পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) বলেছে, তাদের পক্ষে তিন মাসের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হবে না। বিভিন্ন ধরনের আইনি ও পদ্ধতিগত জটিলতার কারণে নির্বাচন আয়োজনে দেরি হবে বলে উল্লেখ করেছে তারা। খবর ডনের।

গত রোববার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব ‘অসাংবিধানিক’ বলে খারিজ করে দেন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। এরপর ইমরান খানের পরামর্শ মেনে পার্লামেন্ট ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার ৯০ দিনের মধ্য দেশটিতে নির্বাচন করতে হবে।

পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ডনকে বলেন, আগাম নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতির জন্য প্রায় ছয় মাস সময় লেগে যাবে। তাঁর মতে, বিভিন্ন এলাকা, বিশেষ করে খাইবার পাখতুনখাওয়ায় নতুন করে নির্বাচনী সীমানা নির্ধারণ করতে হবে। কারণ, ২৬তম সংশোধনীর আওতায় খাইবার পাখতুনখাওয়ায় আসনসংখ্যা বেড়েছে। এ ছাড়া জেলা ও নির্বাচনী আসনের সঙ্গে সংগতি রেখে ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণের চ্যালেঞ্জটিও রয়েছে।

ইমরান খান একটি জনপ্রিয় ও পাশ্চাত্যবিরোধী ‘আখ্যান’ তৈরির চেষ্টা করছেন। তাঁর অনেক অনুসারী এই আখ্যান বিশ্বাস করছেন

ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণের বিষয়টি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এ কাজের ক্ষেত্রে শুধু আপত্তিপত্র আহ্বানের জন্যই আইনে এক মাসের সময় দেওয়া আছে।’ এরপর নির্বাচনী এলাকার সীমা নির্ধারণ করতে অতিরিক্ত এক মাস সময় দিতে হবে। ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার কাজটিতেও সময় লাগবে। এরপর পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়া শেষ করতে অতিরিক্ত তিন মাস সময় লাগবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

এ নির্বাচনী কর্মকর্তা মনে করেন, নির্বাচনসংক্রান্ত সামগ্রী সংগ্রহ, ব্যালট পেপার প্রস্তুত করা এবং ভোট গ্রহণের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণের বিষয়গুলোও চ্যালেঞ্জের। তিনি বলেন, আইন অনুসারে নির্বাচনে জলছাপযুক্ত ব্যালট পেপার ব্যবহার করতে হবে। তবে দেশে এ ধরনের ব্যালট পেপার না থাকায় তা আমদানি করতে হবে। তিনি আরও জানান, নির্বাচন কমিশন ব্যালট পেপারসংক্রান্ত আইন সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছে। ব্যালট পেপারে জলছাপের বদলে ‘নিরাপত্তামূলক ফিচার’ যুক্ত করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

কিছু আইনি জটিলতার কথা উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনের ওই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, পাকিস্তানের নির্বাচনী আইনের ১৪ ধারা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনকে ভোটের চার মাস আগে নির্বাচনী পরিকল্পনা ঘোষণা করতে হবে। নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে বেলুচিস্তানে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছ। আগামী ২৯ মে এ নির্বাচন হবে। পাঞ্জাব, সিন্ধু ও ইসলামাবাদেও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। এমন অবস্থায় সাধারণ নির্বাচন আয়োজন করতে হলে স্থানীয় নির্বাচনের পরিকল্পনা বাতিল করতে হবে বলে উল্লেখ করেন ওই কর্মকর্তা।