পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়াল বলেছেন, অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরির দেওয়া আদেশে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৫ লঙ্ঘিত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। খবর জিও নিউজের।
অনাস্থা প্রস্তাব খারিজের বিষয়টি নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার টানা পঞ্চম দিনের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি এমন মন্তব্য করেন। সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে এ নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত (সুয়োমোটো) শুনানি চলছে।
শুনানি শুরু হলে বক্তব্য দেন ব্যারিস্টার আলি জাফর। তিনি প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির কৌঁসুলি। ব্যারিস্টার জাফর বলেন, অধিবেশন পরিচালনার ক্ষেত্রে পার্লামেন্টের উভয় কক্ষ বিশেষ সুবিধা ভোগ করে থাকে।
এ সময় প্রধান বিচারপতি জানতে চান, এ ঘটনায় জাতীয় পরিষদের কার্যবিবরণী পার্লামেন্টের বাইরে কোনো প্রভাব ফেলেছে কি না? তিনি বলেন, ‘কোনো সিদ্ধান্ত যদি পার্লামেন্টের বাইরে প্রভাব ফেলে, তাহলে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারেন।’
এ সময় বেঞ্চের বিচারপতি মাজহার আলম জানতে চান, পার্লামেন্টে যদি কোনো অসাংবিধানিক ঘটনা সংঘটিত হয়, তার সাংবিধানিক দায়মুক্তি আছে কি না। বিচারপতি জামাল খান মান্দোখেল জানতে চান, পার্লামেন্টে কোনো অসাংবিধানিক ঘটনা ঘটলে তার কি কোনো সমাধান নেই।
জবাবে আইনজীবী জাফর বলেন, পার্লামেন্টকেই বিষয়টির সমাধান করতে হবে। আর সমাধান হলো জনগণের কাছে যাওয়া (নির্বাচন)।
পুরোনো মামলার রায়ের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমন্সে এক সদস্যকে শপথ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ঘোষণা করেছিলেন, তাঁরা এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবেন না।
তখন প্রধান বিচারপতি জানতে চান, যদি পার্লামেন্টে কোনো অন্যায় হয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে কী করণীয়। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘ফেডারেল সরকার গঠন কি পার্লামেন্টের অভ্যন্তরীণ বিষয়?’
জবাবে আইনজীবী জাফর বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করা অথবা অনাস্থা প্রস্তাব পার্লামেন্টের অভ্যন্তরীণ বিষয়। স্পিকার ও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করার জন্য জাতীয় পরিষদ গঠন করা হয়েছে। তবে ফেডারেল সরকার গঠন ও জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার বিষয়টি আদালত পুনর্বিবেচনা করতে পারেন।
এ সময় প্রধান বিচারপতি বান্দিয়াল বলেন, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট হলেই প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তা নির্ধারণ করা যেত।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা বিরোধী দলগুলোর অনাস্থা প্রস্তাব ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে ৩ এপ্রিল খারিজ করে দেন জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার। এরপরই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট। পুরো প্রক্রিয়াটিকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়েছেন বিরোধীরা। সুপ্রিম কোর্ট অনাস্থা প্রস্তাব খারিজের দিনই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে শুনানি গ্রহণ করেন।