করাচিতে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত, বহু হতাহতের শঙ্কা

করাচিতে জিন্নাহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অদূরে আবাসিক এলাকায় যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়। পাকিস্তান, ২২মে। ছবি: এএফপি
করাচিতে জিন্নাহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অদূরে আবাসিক এলাকায় যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়। পাকিস্তান, ২২মে। ছবি: এএফপি
>সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ডন অনলাইনের খবরে বলা হয়, এখন পর্যন্ত ৩৫ আরোহী নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। নিশ্চিত হওয়া গেছে তিনজনের বেঁচে থাকার খবরও। অন্যদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা জানতে আরও সময় লাগবে।

পাকিস্তানের করাচিতে যাত্রীবাহী বিমান বিধবস্ত হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে বহু হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। উড়োজাহাজটিতে ১০০ জনের মতো আরোহী ছিলেন।

পাকিস্তানের ডন অনলাইনের খবরে বলা হয়, দেশটির রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থার (পিআইএ) এ–৩২০ এয়ারবাসটি করাচিতে জিন্নাহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অদূরে বিধ্বস্ত হয়। পিআইএর মুখপাত্র আবদুল্লাহ হাফিজ উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, যাত্রীবাহী উড়োজাহাজটিতে ৯০ জন যাত্রী ও ৮ জন ক্রু ছিলেন। যাত্রীবাহী উড়োজাহাজটি লাহোর থেকে করাচিতে আসছিল। বিমানবন্দরের অদূরে আবাসিক এলাকায় উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়েছে।

পিআইএর ওই মুখপাত্র জানান, দুর্ঘটনার বিষয়ে এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি। উদ্ধার অভিযান চলছে। যাত্রীদের পরিবারের জন্য প্রার্থনা করছি। হালনাগাদ তথ্য পেলেই যথানিয়মে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।

প্রত্যক্ষদর্শী শাকিল আহমেদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, জিন্নাহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কয়েক কিলোমিটার দূরে আবাসিক এলাকায় আছড়ে পড়ে উড়োজাহাজটি। আছড়ে পড়ার আগে একটি মোবাইল টাওয়ারকে ধাক্কা দেয়। দুর্ঘটনাস্থলের বেশ কয়েকটি বাড়ি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নিচ্ছে ইদি ফাউন্ডেশন। এই ফাউন্ডেশনের মুখপাত্র সাদ ইদি বলেন, দুর্ঘটনাস্থল থেকে এখন পর্যন্ত বিমানের ১৩ জন আরোহীকে অচেতন অবস্থায় বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ওই আবাসিক এলাকার ২৫ থেকে ৩০ জন আহত বাসিন্দাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।ঠিক কতজন নিহত হয়েছেন, তা এ মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়।

বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর পরই উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়। ছবি: রয়টার্স
পিআইএর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এয়ার মার্শাল আরশাদ মালিক বলেন, উড়োজাহাজের পাইলট কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ করে কারিগরি ত্রুটির কথা বলেছিলেন। দুটি রানওয়ে প্রস্তুত ছিল উড়োজাহাজটির অবতরণের জন্য।
 

এদিকে বিবিসির খবরে পাকিস্তানের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র আবদুল সাত্তারের বরাত দিয়ে জানানো হয়, উড়োজাহাজটিতে ৯৯ জন যাত্রী ও ৮ জন ক্রু ছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে তাঁরা জেনেছেন। কিছুক্ষণ আগে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়েছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এ ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। দুর্ঘটনার কারণ জানতে যথাযথভাবে তদন্তের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
 

করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে বিভিন্ন দেশের মতো পাকিস্তানও উড়োজাহাজ চলাচল স্থগিত করেছিল। কয়েক দিন আগে বাণিজ্যিক ফ্লাইটের ক্ষেত্রে সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।

পাকিস্তানের সাম্প্রতিক উড়োজাহাজ দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনাটি ঘটে ২০১০ সালে ইসলামাবাদে। ওই দুর্ঘটনায় বেসরকারি বিমান সংস্থা এয়ারব্লুর একটি যাত্রবাহী উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ১৫২ আরোহীর সবাই নিহত হন। এটাই এখন পর্যন্ত পাকিস্তানের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিমান দুর্ঘটনা। এ ছাড়া ২০১২ সালে রাওয়ালপিন্ডিতে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১২৭ আরোহীর সবাই নিহত হন। আর ২০১৬ সালে পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চল থেকে ইসলামাবাদ যাওয়ার পথে যাত্রীবাহী বিমানে আগুন লাগলে ৪৭ জন নিহত হন।