পাকিস্তানের শীর্ষ তদন্ত সংস্থা দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত শুরু করেছে। অভিযোগ হলো, ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে উপহার হিসেবে দামি একটি হার পেয়েছিলেন। বিশেষ সহকারীর মাধ্যমে ১৮ কোটি পাকিস্তানি রুপিতে হারটি বিক্রি করেন। কিন্তু আইন অনুযায়ী ওই হার দেশের কোষাগারে বা ভান্ডারে জমা দেওয়ার কথা ছিল। তবে ইমরান খান সেটা করেননি। এমন অভিযোগেই ইমরান খানের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কার্যক্রম চালু করা হয়েছে।
আইন অনুযায়ী, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে রাষ্ট্রের কর্মচারীরা যদি কোনো উপহার পান, তাহলে সেটা রাষ্ট্রীয় উপহারভান্ডার তোশাখানায় জমা দিতে হয়। যদি তাঁরা সেই উপহার তোশাখানায় জমা না দেন অথবা অন্তত উপহারের অর্ধেক মূল্য রাষ্ট্রীয় কোষাগারে না দেন, তাহলে সেটা বেআইনি কর্মকাণ্ড বলে গণ্য করা হবে।
পাকিস্তানের সংবাদপত্র এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের অনলাইন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উপহার হিসেবে পাওয়া ওই হার রাষ্ট্রীয় উপহারভান্ডার তোশাখানায় জমা না দিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী তাঁর বিশেষ সহকারী জুলফিকার বুখারিকে দেন। বুখারি হারটি লাহোরের একজন জহুরির কাছে ১৮ কোটি রুপিতে বিক্রি করেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে উপহারের হার বিক্রির এ অভিযোগ পাওয়ার পর পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফআইএ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় পদে থেকে পাওয়া কোনো উপহার রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হবে এবং সেই উপহার জমা থাকবে রাষ্ট্রের উপহারভান্ডারে অথবা অর্ধেক মূল্য পরিশোধ করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নিজের কাছেই সেটি রেখে দিতে পারবেন। কিন্তু গত সপ্তাহে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে অনাস্থা প্রস্তাব পাসের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে অপসারিত ইমরান খান মাত্র কয়েক হাজার রুপি জাতীয় কোষাগারে জমা দিয়ে ওই হার নিজের কাছে রেখে দেন, যা বেআইনি।
জাতীয় পরিষদে অনাস্থা ভোটে হেরে বিদায় নিয়েছেন ইমরান খান। পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন পাকিস্তান মুসলিম লীগের (নওয়াজে) শাহবাজ শরিফ। তিনি ক্ষমতায় আসার পর সরকারি কর্মচারীদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ ছয় সহযোগী যাতে দেশ ছাড়তে না পারে, সে জন্য তাঁদের নাম ‘স্টপ-লিস্টে’ যুক্ত করা হয়েছে। ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের নেতাদের বাড়িতে তল্লাশি ও অভিযান চালানোরও খবর মিলছে।