পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের জন্য ২৫ মার্চ শুক্রবার পার্লামেন্টে গুরুত্বপূর্ণ অধিবেশন আহ্বান করেছেন স্পিকার আসাদ কায়সার। পাকিস্তানের ডন অনলাইনের খবরে বলা হয়, আজ রোববার স্পিকারের কার্যালয় থেকে এ কথা জানানো হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ২০১৮ সালে ইমরান খান ক্ষমতায় আসার পর থেকে এবারের অনাস্থা প্রস্তাবটিকে তাঁর জন্য সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
এ মাসেই বিরোধী দলের জোটের পক্ষ থেকে ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়। বিরোধী দলগুলোর দাবি, পার্লামেন্টে ইমরান খান সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন। ইমরানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফের এক ডজনের বেশি সদস্য এখন তাঁর পাশে নেই। এমনকি তাঁর সরকারের জোট শরিকেরাও বিরোধী দলের প্রতি ঝুঁকেছেন।
রয়টার্স বলছে, ইমরানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের ফলে দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক ক্ষমতাধর দেশটির রাজনৈতিক অস্থিরতার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে ৮ মার্চ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেয় বিরোধী দলগুলো। এ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা ও ভোটাভুটির জন্য অধিবেশন ডাকতে স্পিকার আসাদ কায়সারের প্রতি লিখিত আবেদন জানায় তারা। পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, লিখিত আবেদন জমা পড়ার ১৪ দিনের মধ্যে স্পিকারকে আলোচনার জন্য অধিবেশন ডাকতে হবে। তার মানে হলো, ২২ মার্চের মধ্যে অধিবেশন আয়োজন করার কথা। তবে এদিনই আবার জাতীয় পরিষদে শুরু হচ্ছে ওআইসির দুই দিনব্যাপী পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন।
পাকিস্তানের স্পিকারের কার্যালয় বলেছে, ওআইসির সম্মেলনের কারণে অধিবেশন দুই দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তানের বিরোধী দলের পক্ষ থেকে ইমরান খানকে সরিয়ে দিতে নানা প্রচার চালানো হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে দেশের অর্থনীতি অব্যবস্থাপনা, পররাষ্ট্রনীতি ও সরকার পরিচালনা নিয়ে অভিযোগ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত পাকিস্তানের কোনো প্রধানমন্ত্রী তাঁর পুরো মেয়াদ সম্পন্ন করতে পারেননি।
পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে ইমরান খানের জোটের শরিকদের ২০টি আসন রয়েছে। পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, ৩৪২ সদস্যবিশিষ্ট নিম্নকক্ষে উত্থাপিত অনাস্থা প্রস্তাব পাসের জন্য প্রয়োজন ১৭২ ভোট। পার্লামেন্টে ইমরান খানের রয়েছে ১৫৫ আসন।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন), পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) মিলিয়ে ১৬৩টি আসন রয়েছে। তবে ইমরান খানের দলছুট সদস্যদের ভোট তারা পেলে অনাস্থা প্রস্তাব সফল হবে বলে আশাবাদী তারা।
বিরোধী দল ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, পাকিস্তানে ক্ষমতায় আসার জন্য দেশটির শক্তিশালী সেনাবাহিনীর সমর্থন প্রয়োজন হবে। এর আগে ইমরান খান সেনাবাহিনীর সমর্থনে ক্ষমতায় আসেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।