আজ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে ভোট গ্রহণ। হারলে প্রধানমন্ত্রীর পদ হারাবেন ইমরান খান।
পাকিস্তানের জনগণ আজ শনিবার নতুন ইতিহাসের অংশ হতে যাচ্ছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে অনাস্থা ভোটের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। ভোটে হেরে গেলে ক্ষমতাচ্যুত হবেন তিনি। আর জিতলে এই যাত্রায় টিকে যাবে ইমরানের গদি।
ডনের খবরে বলা হয়েছে, অনাস্থা ভোট খারিজ ও জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করলে দেশটির অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি নতুন মোড় নেয়। সর্বোচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী, আজ শনিবার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের অধিবেশন আহ্বান করতে বাধ্য জাতীয় পরিষদের স্পিকার। ৩ এপ্রিলের আলোচ্যসূচির সঙ্গে মিল রেখে সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যেই এই অধিবেশন শুরু করতে হবে। ৩৪২ আসনের পার্লামেন্টের মধ্যে ১৭২ জনের সমর্থনের প্রয়োজন ইমরান খানের সরকারের পতনের জন্য। বিরোধীদের দাবি, তাঁদের সেই সমর্থন রয়েছে।
গত ৭ মার্চ জাতীয় পরিষদের সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেয় বিরোধী দলগুলো। এরপর ২৫ মার্চ জাতীয় পরিষদে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেন স্পিকার। প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটির জন্য ৩ এপ্রিল দিন ধার্য করা হয়। কিন্তু বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা দিয়ে খারিজ করে দেন ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি। একই সঙ্গে অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন তিনি। টানা পাঁচ দিনের দীর্ঘ শুনানি শেষে ওই অনাস্থা ভোট খারিজ ও জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করে বৃহস্পতিবার সর্বসম্মতিভাবে রায় দেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ। একই সঙ্গে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর শনিবার ভোট গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে সর্বোচ্চ আদালত বলেছেন, অনাস্থা প্রস্তাবের সুরাহা না করা অবধি পার্লামেন্টের অধিবেশন মুলতবি করা যাবে না।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, আদালতের এ রায় বিচারিক অভ্যুত্থানের সঙ্গে তুলনা করে মানবাধিকারবিষয়ক মন্ত্রী শিরিন মাজারি টুইট করেন, ‘গত রাতে একটি বিচারিক অভ্যুত্থান ঘটেছে...শেষ হয়েছে সংসদীয় আধিপত্য।’ এই বিষয়ে তাঁরা লড়াই চালিয়ে যাবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন। ইমরানও বলেন, দেশের জন্য তিনি শেষ বল পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবেন।
তবে বিরোধী দলের নেতারা আদালতের রায়কে ‘গণতন্ত্রের বিজয়’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
আদালতের রায়ের পর গতকাল মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডাকেন ইমরান খান। একই সঙ্গে তিনি নিজ দল পিটিআইয়ের পার্লামেন্টারি কমিটির সদস্যদের সঙ্গেও পৃথক বৈঠক করেন।