নারীর ওপর সহিংসতা
নারীর ওপর সহিংসতা

সম্পর্কে জড়ানো কিশোরীদের এক-চতুর্থাংশই সঙ্গীর সহিংসতার শিকার

প্রেমের সম্পর্কে থাকাকালে কিশোরীদের প্রায় এক-চতুর্থাংশ শারীরিক ও যৌন সহিংসতার শিকার হন বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

আজ মঙ্গলবার ডব্লিউএইচও প্রকাশিত এক সমীক্ষার ফলাফল থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এ ধরনের সহিংসতা রোধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

আন্তর্জাতিক চিকিৎসা সাময়িকী দ্য ল্যানসেটে এ–সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ১৫৪টি দেশ ও অঞ্চলের ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী কয়েক হাজার কিশোরীর ওপর সমীক্ষাটি চালানো হয়।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর কাছ থেকে অন্তত একবারের জন্য হলেও সহিংসতার শিকার হয়েছে ২৪ শতাংশ কিশোরী। ২০০০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত চালানো হয় এ সমীক্ষা।

সমীক্ষা প্রতিবেদনের প্রধান রচয়িতা লিনমারি সারডিনহা বলেন, সঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্কে ফাটলের কারণে কিশোরীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে ও এমন পরিস্থিতিতে তারা কোনো সহায়তা পায় না। এ উদ্বেগই মূলত সমীক্ষা পরিচালনার পেছনে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।

সহিংসতা ও নারী অধিকারের মধ্যে একটি পারস্পরিক সম্পর্ক আছে বলে সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, যেসব দেশে তরুণী ও নারীরা শিক্ষার সুযোগ কম পান এবং উত্তরাধিকার আইনে বৈষম্যের শিকার হন, সেসব দেশে সহিংসতার মাত্রা বেশি।

লিনমারি সারডিনহা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমি অনেক বেশি অবাক হয়েছি, এটি দেখে যে বিপুলসংখ্যক কিশোরী এরই মধ্যে সহিংসতার শিকার হয়েছে, এমনকি তা তাদের ২০তম জন্মদিনের আগেই।’

সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, সহিংস আচরণগুলোর মধ্যে রয়েছে লাথি, আঘাত, ধর্ষণ ও ধর্ষণচেষ্টাসহ নানা ধরনের যৌন নিপীড়ন।

সহিংসতা ও নারী অধিকারের মধ্যে একটি পারস্পরিক সম্পর্ক আছে বলে সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, যেসব দেশে তরুণী ও নারীরা শিক্ষার সুযোগ কম পান এবং উত্তরাধিকার আইনে বৈষম্যের শিকার হন, সেসব দেশে সহিংসতার মাত্রা বেশি।

ডব্লিউএইচওর বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সহিংসতার হার সবচেয়ে বেশি ওশেনিয়া অঞ্চলে। এরপরই আফ্রিকা মহাদেশের অবস্থান। পাপুয়া নিউগিনির ৪৯ শতাংশ কিশোরী ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর কাছ থেকে সহিংসতার শিকার হন। গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের ৪২ শতাংশ কিশোরী এমন সহিংসতার শিকার। সহিংস ঘটনা সবচেয়ে কম ঘটে ইউরোপে। সেখানে সহিংসতার হার ১০ শতাংশ।

ডব্লিউএইচওর যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং গবেষণা বিভাগের পরিচালক প্যাসকেল অ্যালোটে বলেন, শারীরিক ও মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বয়সে এ ধরনের সহিংসতা তীব্র ও দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির কারণ হতে পারে। বিষয়টিকে অনেক বেশি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত। সহিংসতা প্রতিরোধে ও ভুক্তভোগীদের সহায়তায় মনোযোগ দেওয়া জরুরি।