বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু (বাঁয়ে) ও কমলা হ্যারিস (ডানে)। ২৫ জুলাই ২০২৪
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু (বাঁয়ে) ও কমলা হ্যারিস (ডানে)। ২৫ জুলাই ২০২৪

গাজায় দুর্ভোগের ব্যাপারে নীরব থাকব না, নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পর কমলা

যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ডেমোক্রেটিক পার্টির সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস বলেছেন, চলমান যুদ্ধের কারণে গাজা উপত্যকার মানুষকে যে ধরনের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, তা নিয়ে তিনি নীরব থাকবেন না। গতকাল বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

ডেমোক্রেটিক পার্টির অভ্যন্তরে যেসব বিষয় নিয়ে সবচেয়ে মতবিরোধ আছে, তার একটি গাজা ইস্যু। পার্টির সম্ভাব্য এ প্রেসিডেন্ট প্রার্থী গতকাল বৃহস্পতিবার সেই ইস্যুতে কথা বলেছেন। একই দিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গেও নেতানিয়াহুর বৈঠক হয়েছে।

গত রোববার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন জো বাইডেন। তিনি প্রার্থী হিসেবে কমলা হ্যারিসকে সমর্থন জানান। এখন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে দলের আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন কমলা। এর মধ্যেই গতকাল নেতানিয়াহুর সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়।

কমলা হ্যারিস বলেন, ইসরায়েলের অস্তিত্ব ও নিরাপত্তার প্রতি তাঁর যে প্রতিশ্রুতি, তা ‘অটল’ আছে। কিন্তু যুদ্ধে ‘অনেক বেশি’ নিরীহ বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে উদ্বেগ জানান তিনি।

কমলা হ্যারিস বলেন, ‘গাজায় গত ৯ মাসে যা কিছু ঘটেছে, তা ভয়াবহ। মৃত শিশুদের ছবি এবং নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে মরিয়া হয়ে পালাতে থাকা ক্ষুধার্ত মানুষ, যাঁদের কাউকে কাউকে দ্বিতীয়, তৃতীয় কিংবা চতুর্থবারের মতো বাস্তুচ্যুত হতে হয়েছে, তাঁদের ছবি দেখা যাচ্ছে। এমন অবস্থায় এসব হৃদয়বিদারক ঘটনা থেকে আমরা দৃষ্টি ফিরিয়ে নিতে পারি না। এমন দুর্ভোগ দেখার পর আমরা চুপ থাকতে পারি না এবং আমি নীরব থাকব না।’

গাজায় যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাবে রাজি হওয়ার জন্যও নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কমলা। তবে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন তিনি। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসকে ‘নৃশংস সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে উল্লেখ করেন সম্ভাব্য এ প্রেসিডেন্ট প্রার্থী।

কমলা বলেন, ‘এই যুদ্ধ অবসানের সময় এসেছে। আর তা এমনভাবে এর শেষ করতে হবে যেন ইসরায়েল নিরাপদ থাকে, সব জিম্মি মুক্তি পায়, গাজায় ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগ শেষ হয় এবং ফিলিস্তিনি জনগণ তাদের স্বাধীনতা, মর্যাদা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার চর্চা করতে পারে।’

গত বুধবার ওয়াশিংটনে মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেন নেতানিয়াহু। ভাষণে ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান যুদ্ধ শেষে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন একটি জোট গড়ার আহ্বান জানান নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল এ জোট গড়তে পারে। নেতানিয়াহুর এ সফরের বিরোধিতা করে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ হয়েছে।

এর মধ্যেই গতকাল হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গেও বৈঠক করেন নেতানিয়াহু।

আলোচনা শুরুর আগে ওভাল অফিস থেকে দেওয়া বক্তব্যে নেতানিয়াহু বলেন, তিনি বাইডেনের সঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে আশাবাদী।

বৈঠকের আগে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কারবি এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি খুব কাছাকাছি পর্যায়ে আছে বলে তাঁর বিশ্বাস। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, মতবিরোধগুলো কমিয়ে আনা যাবে।’