ফিলিস্তিনের গাজার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। উত্তরে গাজা নগরী, মধ্যাঞ্চলে নুসেইরাত আশ্রয়শিবির এবং দক্ষিণে খান ইউনিস ও রাফায় হামলার খবর পাওয়া গেছে। এদিকে উপত্যকাটিতে ইসরায়েলি সেনাদের লক্ষ্য করে আজ সোমবার রকেট হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন ইসলামিক জিহাদ।
ইসলামিক জিহাদ জানিয়েছে, ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের নৃশংসতার জবাবেই ওই রকেট হামলা চালানো হয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েল বলেছে, খান ইউনিস অতিক্রম করার সময় ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করতে পেরেছে তারা। এর মধ্যে বেশির ভাগই ধ্বংস করা হয়েছে। পরে কামান দিয়ে পাল্টা হামলা চালানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, খান ইউনিসের পাশাপাশি দক্ষিণ গাজার রাফা এলাকা ও মধ্যগাজার নুসেইরাত আশ্রয়শিবিরে ইসরায়েলি হামলা হয়েছে। এ ছাড়া গাজা নগরীর শুজাইয়া এলাকায় পঞ্চম দিনের মতো যুদ্ধ চলছে। সেখানে ইসরায়েলি ট্যাংকগুলো থেকে গোলা ছোড়া হচ্ছে। শুজাইয়ার ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সঙ্গে ‘কঠিন লড়াই’ চলছে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ইসরায়েলি বাহিনী জানিয়েছে, শুজাইয়ায় বিমান হামলা চালিয়ে প্রায় ২০ জন সশস্ত্র যোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছে।
গাজায় স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, ৯ মাস ধরে চলা যুদ্ধে উপত্যকাটিতে অন্তত ৩৭ হাজার ৯০০ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৮০ হাজার ৬০ জন। হতাহত এই ফিলিস্তিনিদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।
এদিকে গাজা নগরীর আল-শিফা হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ আবু সালমিয়াসহ বেশ কয়েক ফিলিস্তিনি বন্দীকে গতকাল মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। মধ্যগাজার দেইর আল-বালাহ এলাকার একটি হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, তাঁদের ওই হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলও।
গত নভেম্বরে আবু সালমিয়াকে আটক করে নিয়ে যান ইসরায়েলি সেনারা। মুক্তির পর তিনি জানান, তাঁর ওপর ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হয়েছে। বন্দীদের শারীরিক ও মানসিকভাবে অবমাননা করা হয়েছে। তাঁদের খাবার ও ওষুধ দেওয়া হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদের সময় বন্দী থাকা অনেকের মৃত্যু হয়েছে।
ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা ও অবরোধে গাজার বাসিন্দারাও কম দুর্দশার মধ্যে নেই। খাবার, পানি, চিকিৎসা ও জ্বালানির অভাবে সেখানে চলছে হাহাকার। গাজাবাসী চরম মানবিক সংকটের মধ্যে রয়েছে বলে বেশ কয়েক দফায় সতর্ক করেছে জাতিসংঘ।