ইসরায়েল ও হামাসের যুদ্ধবিরতির তৃতীয় দিনে আরও বন্দীর মুক্তি, আছে ৪ বছরের শিশুও

রেডক্রসের কাছে জিম্মিদের হস্তান্তর করছে হামাস, ২৬ নভেম্বর হামাসের সামরিক শাখায় প্রকাশিত ভিডিও থেকে ছবিটি নেওয়া হয়েছে 
ছবি: রয়টার্স

সাময়িক যুদ্ধবিরতির তৃতীয় দিনে গতকাল রোববার গাজা উপত্যকা থেকে আরও ১৭ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। এর মধ্যে ৪ বছর বয়সী এক মার্কিন শিশুও আছে। একই দিন ৩৯ জন ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল।

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস বলেছে, গতকাল তারা ১৩ জন ইসরায়েলি, ৩ জন থাই এবং ১ জন রুশ নাগরিককে হস্তান্তর করেছে। আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা রেডক্রস বলেছে, গাজা থেকে মুক্তি পাওয়া ১৭ জিম্মিকে তারা সফলভাবে স্থানান্তর করেছে।

ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফার প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলও তাদের কারাগার থেকে ৩৯ জন ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে। তারা সবাই কিশোর-কিশোরী।

গত শুক্রবার থেকে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চার দিনের যুদ্ধবিরতি চলছে। এর আওতায় ধাপে ধাপে ৫০ ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ১৫০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দীকে মুক্তি দেওয়ার কথা। আজ সোমবার এ যুদ্ধবিরতির শেষ দিন।

গতকাল ৪ বছর বয়সী যে মার্কিন শিশুকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, তার নাম আবিগাইল এডান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার দিন ওই শিশুর সামনেই তার মা-বাবাকে হত্যা করেছে হামাস। তখন থেকে শিশুটি হামাসের কাছে ছিল।

যুক্তরাষ্ট্রে এক সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন বলেন, ‘ও যা সহ্য করেছে, তা চিন্তারও বাইরে।’

জো বাইডেন বলেছেন, তিনি আশা করেন, জিম্মিদের সবাই মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত লড়াই বন্ধ থাকবে। হামাসের কাছে আটক থাকা আরও বেশিসংখ্যক মার্কিন নাগরিককে মুক্তি দেওয়া হবে বলেও আশা করছেন তিনি।

হামাস বলেছে, ইসরায়েল থেকে ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেওয়ার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য তৎপরতা চালানো হলে তারা যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে রাজি আছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গতকাল গাজা উপত্যকার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর সঙ্গে দেখা করেছেন। তিনি বলেছেন, জিম্মিদের মুক্তির ব্যাপারে তিনি বাইডেনের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি আরও বলেন, সাময়িক এ যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে তিনি রাজি আছেন, তবে বর্ধিত সময়ে প্রতিদিন ১০ জন করে বন্দীকে মুক্তি দিতে হবে।

নেতানিয়াহু বাইডেনকে আরও বলেছেন, যুদ্ধবিরতি শেষে ইসরায়েল আবারও তাদের লক্ষ্য অর্জনে পূর্ণ শক্তি প্রয়োগ করবে।

যুদ্ধবিরতির প্রথম দিন গত শুক্রবার ১৩ ইসরায়েলি নাগরিককে মুক্তি দিয়েছে হামাস। এ ছাড়া থাইল্যান্ডের ১০ নাগরিক এবং ফিলিপাইনের ১ নাগরিককেও সেদিন মুক্তি দেওয়া হয়। বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ওই দিনই ৩৯ নারী ও শিশুকে মুক্তি দেওয়া হয়। দ্বিতীয় দিন শনিবার রাতে আরও ১৭ জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। এর মধ্যে ১৩ জন ইসরায়েলের এবং ৪ জন থাইল্যান্ডের নাগরিক।

এ দুই দিন ইসরায়েলের কারাগার থেকে ৩৯ জন করে ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।