ফিলিস্তানের গাজা উপত্যকার জাবালিয়া ও নুসেইরাত শরণার্থীশিবিরে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে নিহত হয়েছেন অন্তত ৩৬ জন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতভর গাজার অন্যান্য এলাকাও ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার শিকার হয়েছে। পশ্চিম তীরেও চলেছে তাদের অভিযান।
জাবালিয়া গাজার সবচেয়ে বড় শরণার্থীশিবির। গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা আন্দোলনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলার পর শিবিরটিতে বিভিন্ন সময় বোমাবর্ষণ করেছে ইসরায়েল। সবশেষ বৃহস্পতিবার রাতে শিবিরটির বেশ কয়েকটি আবাসিক ভবন লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। এতে ১৮ জন নিহতসহ আহত হয়েছেন অনেকে।
ওই দিন রাতে মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থীশিবিরের একটি বাড়িতে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আরও ১৮ জন নিহত হন। এ ছাড়া দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসসহ বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলের যুদ্ধবিমান থেকে ফেলা বোমার বিস্ফোরণে বেশ কয়েকজনের প্রাণহানি হয়েছে।
এ নিয়ে ৭ অক্টোবর থেকে উপত্যকাটিতে ১১ হাজার ৫০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হলেন। এদিকে আজ শুক্রবার পশ্চিম তীরে অভিযান চালিয়ে পাঁচ বন্দুকধারীকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
ইসরায়েলের অবরোধ ও হামলার শিকার গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফায় পানি ও অক্সিজেন ফুরিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির পরিচালক মুহাম্মদ আবু সালমিয়া। তিনি বলেন, ‘এখন হাসপাতালটিতে ৬৫০ জনের বেশি রোগী আছেন। রয়েছেন ৫০০ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী। হামলার কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়া পাঁচ হাজার ফিলিস্তিনিও হাসপাতাল প্রাঙ্গণে আশ্রয় নিয়েছেন। এমন এক পরিস্থিতির মধ্যেও আমাদের কাছে পানি ও অক্সিজেন নেই।’
ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযোগ, হামাসের সদস্যরা আল–শিফা হাসপাতালকে গোপন ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করছেন। এ জন্য হাসপাতালটিতে অভিযান চালিয়েছে তারা। যদিও হামাস ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ দাবি অস্বীকার করেছে।
শুক্রবারও হাসপাতালটিতে ইসরায়েলি সেনাদের তল্লাশি চলেছে। হাসপাতালটি ঘিরে রেখেছে ট্যাংক। বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালটিতে ২২ রোগীর মৃত্যু হয়েছে জানিয়ে পরিচালক আবু সালমিয়া বলেন, ‘অভিযানের কারণে কেউ এক ভবন থেকে অন্য ভবনে যেতে পারছেন না। আমরা এখন আমাদের সহকর্মীদের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারছি না।’
জ্বালানিসংকট এবং যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়ার কারণে গতকাল টানা দ্বিতীয় দিনের মতো গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ রেখেছে জাতিসংঘ। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) নির্বাহী পরিচালক সিনডি ম্যাককেইন বলেছেন, গাজার বাসিন্দাদের জরুরি খাদ্যসহায়তা প্রয়োজন। সেখানে খাবার ও পানি নেই বললেই চলে। এদিকে শীতকাল আসছে। এ পরিস্থিতিতে গাজাবাসী শিগগিরই তীব্র ক্ষুধার কবলে পড়তে পারে।