ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা থেকে জিম্মিদের মুক্ত করার আলোচনায় ‘কিছুটা অগ্রগতি’ হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গতকাল সোমবার ইসরায়েলি পার্লামেন্টে আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশে নেতানিয়াহু এ কথা জানান।
ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোও যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি চুক্তির বিষয়ে অগ্রগতির কথা বলার দুই দিন পর পার্লামেন্টে এ তথ্য জানালেন নেতানিয়াহু।
গাজায় ১৪ মাসের বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ চলছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। ওই দিন ইসরায়েল থেকে ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। এর মধ্যে ৯৬ জন এখনো জিম্মি আছেন। ৩৪ জন মারা গেছেন বলে দাবি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর। অন্যরা ইতিপূর্বে হওয়া যুদ্ধবিরতির সময় ছাড়া পেয়েছেন।
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তির জন্য কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দোহায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনায় একটি চুক্তির ব্যাপারে আশা তৈরি হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে গতকাল পার্লামেন্টে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যেসব উদ্যোগ নিয়েছি, তার সবকিছু প্রকাশ করতে পারব না। তাঁদের ফিরিয়ে আনতে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। আমি সতর্কভাবে বলতে চাই, এ ক্ষেত্রে কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে এবং তাঁদের সবাইকে বাড়িতে না ফেরানো পর্যন্ত আমরা থামব না।’
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘জিম্মিদের পরিবারগুলোর উদ্দেশে আমি বলতে চাই, আপনাদের কথা আমাদের ভাবনায় আছে এবং আপনাদের প্রিয়জনকে ফিরে পাওয়ার আশা আমরা ছেড়ে দেব না। তাঁরা আমাদেরও প্রিয়জন।’
জিম্মি মুক্তির লক্ষ্যে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার আলোচনায় সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে জিম্মিদের পরিবারগুলো। সমালোচকেরা দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছেন, নেতানিয়াহু এ–সংক্রান্ত আলোচনা স্থবির করে রেখেছেন। তিনি তাঁর ডানপন্থী জোটের শরিকদের শান্ত রাখতে যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করছেন।
এরই মধ্যে গত শনিবার হামাস, ইসলামিক জিহাদ ও বামপন্থী পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন আলোচনায় অগ্রগতি হওয়ার কথা বলেছে।
২০২৩ সালের নভেম্বরে এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির পর থেকে দুই পক্ষের আলোচনা একাধিকবার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। একটি দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার বিষয়টিই বিরোধের মূল কারণ। আরেকটি অমীমাংসিত সমস্যা অঞ্চলটির যুদ্ধপরবর্তী শাসনব্যবস্থা কেমন হবে তা নিয়ে।
হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জেদিন আল–কাসাম ব্রিগেড বলেছে, সামনে ইসরায়েলি বাহিনী কীভাবে তাদের আক্রমণ চালায়, তার ওপর কিছু বন্দীর ভাগ্য নির্ভর করছে।