গাজায় ত্রাণ নেওয়ার সুযোগ দিতে ইসরায়েল রাজি হওয়ার পর ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ এ উপত্যকায় ২০ ট্রাক ত্রাণসহায়তা ঢুকতে দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে মিসর। দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল–সিসির সঙ্গে কথা বলার পর গতকাল বুধবার রাতে এ তথ্য জানান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
ইসরায়েল সফর শেষে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার পথে এ কথা জানান জো বাইডেন। তিনি বলেন, রাফাহ সীমান্ত দিয়ে গাজায় ২০ ট্রাক ত্রাণসহায়তা পাঠানোর ব্যাপারে রাজি হয়েছেন মিসরের প্রেসিডেন্ট সিসি। তবে হামাস যদি এসব ত্রাণ নেয়, তাহলে গাজায় ত্রাণসহায়তা পাঠানোর পথ বন্ধ হয়ে যাবে।
এর আগে গাজায় ত্রাণসহায়তা যেতে দিতে রাজি হয় ইসরায়েল। বাইডেন ইসরায়েল সফরে গিয়ে দেশটির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর এ তথ্য জানান। এরপর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তরও রাফাহ সীমান্ত দিয়ে গাজায় ত্রাণ যেতে বাধা দেওয়া হবে না বলে জানায়।
তবে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থাগুলো বলছে, গাজায় এখন যে ভয়াবহ মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে, তাতে করে এ ২০ ট্রাক ত্রাণসহায়তা দিয়ে ন্যূনতম চাহিদাও পূরণ করা সম্ভব নয়। কারণ, গাজার ১০ লাখ উদ্বাস্তুর জন্য এখন প্রতিদিন অন্তত ১০০ ট্রাক ত্রাণসহায়তার প্রয়োজন।
গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাস ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায়। ওই দিনই বোমা হামলার পাশাপাশি গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে ইসরায়েল। দুই দিন পর পুরোপুরি গাজা অবরোধের ঘোষণা দিয়ে ইসরায়েল সেখানে খাবার, পানি, ওষুধ ও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।
গাজায় খাবার, পানি, ওষুধসহ জরুরি পণ্যের ব্যাপক সংকট দেখা দিয়েছে। সেখানে পাঠানোর জন্য ত্রাণের পণ্য নিয়ে শত শত ট্রাক কয়েক দিন ধরে মিসর সীমান্তের রাফাহ ক্রসিংয়ে আটকে আছে। ইসরায়েল ওই সীমান্তেও বোমা হামলা চালিয়েছে। তারা এত দিন গাজায় কোনো ধরনের পণ্য ঢুকতে না দেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল ছিল। যদিও জাতিসংঘের পক্ষ থেকে গাজার শোচনীয় পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে সেখানে ত্রাণ পাঠানোর সুযোগ করে দেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছিল।
গাজায় ত্রাণ পাঠানোর এখন একমাত্র পথ উপত্যকাটির দক্ষিণে অবস্থিত রাফাহ সীমান্ত। রাফাহ গাজার সর্ব দক্ষিণে অবস্থিত মিসরের সিনাই উপদ্বীপ–সংলগ্ন একটি সীমান্ত পথ। গাজা থেকে বের হওয়ার আরও দুটি সীমান্তপথ থাকলেও সেগুলো ইসরায়েল সীমান্তে এবং বর্তমানে পুরোপুরি বন্ধ।
এ কারণে রাফাহ সীমান্ত এখন অবরুদ্ধ গাজার বাসিন্দাদের উপত্যকা ছেড়ে পালানোর একমাত্র ভরসা। তবে ইসরায়েল গাজায় হামলা শুরুর পর শরণার্থীর ঢলের শঙ্কায় সীমান্তটি বন্ধ করে দিয়েছে মিসর। এ ছাড়া সীমান্তটি দিয়ে মানুষ ও পণ্য পারাপারে ইসরায়েলের অনুমতি থাকতে হয়।