ইরানে পুলিশ হেফাজতে মাসার মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক তরুণের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর নতুন করে নিষেধাজ্ঞায় পড়তে যাচ্ছে তেহরান। গতকাল শুক্রবার দেশটির ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর ইরানে নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার বিক্ষোভকারী মহসেন সেকারির (২৩) মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে ইরান। তাঁর বিরুদ্ধে তেহরানে এক নিরাপত্তাকর্মীকে ছুরিকাঘাতে আহত করা ও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করার অভিযোগ আনা হয়।
সেকারির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অধিকারকর্মীরা। তাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, আরও কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে শিগগিরই ফাঁসি দেওয়া হতে পারে। এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা চলছে।
ইরানের বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রতিবাদের মুখে তাঁরা ‘সর্বোচ্চ সংযম’ দেখিয়েছে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর দেশটির নীতি পুলিশের হেফাজতে মাসা আমিনি নামের এক কুর্দি তরুণীর মৃত্যুর পর দেশটিতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। মাসার বিরুদ্ধে হিজাব নীতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করা হয়।
বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়, মহসেন সেকারি তেহরানের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন এবং একজন নিরাপত্তাকর্মীকে ছুরিকাঘাতে আহত করেন।
গতকাল যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে বিশ্বজুড়ে ৩০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেওয়া হয়। এর মধ্যে মহসেন সেকারিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া কর্মকর্তারাও রয়েছেন।
ইউরোপীয় কূটনীতিকেরা বলেন, রাশিয়াকে ড্রোন সরবরাহ ও বিক্ষোভকারীদের ওপর দমন–পীড়নের কারণে ইইউ ইরানের ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে। আগামী সোমবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে ওই নিষেধাজ্ঞার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গত বৃহস্পতিবার মহসেন সেকারির মৃত্যুদণ্ডের ঘটনাকে ভয়ংকর বলে উল্লেখ করে।
অসলোভিত্তিক ইরান হিউম্যান রাইটসের (আইএইচআর) পরিচালক মাহমুদ আমিরি-মোগাদ্দাম বলেন, ‘আইনজীবী ছাড়াই তাড়াহুড়া এবং অন্যায্য বিচারে সেকারিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।’