ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস দুই ইসরায়েলি নারীকে মুক্তি দিয়েছে। হামাসের সামরিক শাখা কাসাম ব্রিগেডসের মুখপাত্র আবু ওবায়দা গতকাল সোমবার এসব কথা জানিয়েছেন। কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় এই দুই বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে আবু ওবায়দা বলেন, ‘এ দুজনকে গত শুক্রবারই আমরা মুক্তি দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ইসরায়েল তাঁদের নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মানবিক ও স্বাস্থ্যগত কারণ বিবেচনায় তাঁদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।’
মিসরের গণমাধ্যমে মুক্তি পাওয়া বয়স্ক দুই নারীর ছবি প্রকাশ করা হয়। তাঁরা হলেন— নুরিত কুপার (৭৯) ও ইয়োশেভেদ লিফশিৎজ (৮৫)। মিসর ও গাজার মধ্যকার রাফাহ ক্রসিং হয়ে অ্যাম্বুলেন্সে তাঁরা মিসরে পৌঁছান।
অ্যাম্বুলেন্সে দুই বন্দীকে হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় জড়িত ছিল আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটি (আইসিআরসি)। এক বিবৃতিতে আইসিআরসি বলেছে, ভবিষ্যতেও বন্দী হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় সংগঠনটি অংশ নিতে প্রস্তুত।
এদিকে ইসরায়েলি টেলিভিশন ‘চ্যানেল টুয়েলভ’ জানিয়েছে, হামাসের কাছ থেকে মুক্তি পাওয়া দুই বন্দীর পরিবারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। হামাসের হাতে এখনো দুই শতাধিক বন্দী রয়েছে বলে ইসরায়েল জানিয়েছে।
এর আগে শুক্রবার দুই মার্কিন নাগরিককে মুক্তি দেয় হামাস। তাঁরা হলেন—জুডিথ রানান (৫৯) ও তাঁর মেয়ে নাতালি রানান (১৮)। বন্দীদের মধ্যে যাঁরা ইসরায়েলি নন, সম্প্রতি তাঁদের ‘অতিথি’ সম্বোধন করেছিল হামাস। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হবে বলেও সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
নতুন করে বন্দী মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে হামাসের মুখপাত্র ওসামা হামদান আল-জাজিরাকে বলেছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তাঁদের নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। এখন গ্রহণ করেছেন সম্ভবত ইসরায়েলের রাজপথ থেকে আসা চাপের কারণে।
বন্দীদের নিরাপত্তা নিয়ে হওয়া সমঝোতার শর্ত ইসরায়েল লঙ্ঘন করার পরও তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানান হামদান। তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম, অন্তত তাঁদের মুক্তি দেওয়ার সময় যেন হামলা বন্ধ করা হয়। যাতে তাঁদেরকে রেডক্রসের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া যায়, কিন্তু ইসরায়েল সেটা মানেনি। এতে বোঝা গেল, আপনি ইসরায়েলি পক্ষকে বিশ্বাস করতে পারেন না।’
এমন সময় হামাস নতুন করে বন্দী মুক্তি দিয়েছে, যখন গাজায় ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় ৪৩৬ জন নিহত হয়েছে। এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় পাঁচ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের দুই হাজারই শিশু।