ইরানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে মাসুদ পেজেশকিয়ানকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন দিলেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। আজ রোববার একটি অনুষ্ঠানে এ অনুমোদন দেন তিনি। ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যমে ওই অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
চলতি মাসে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পান মধ্যপন্থী হিসেবে পরিচিত পেজেশকিয়ান। আগামী মঙ্গলবার তাঁর প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার কথা রয়েছে। এমন সময় তিনি এ দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন, যখন গাজা যুদ্ধ ও লেবাননের ইরানপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের সংঘাত ঘিরে উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য।
যেমন গতকাল শনিবারই ইসরায়েলের দখল করা গোলান মালভূমিতে একটি ফুটবল মাঠে হিজবুল্লাহর রকেট হামলায় ১২ জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। এর শক্ত জবাব দেওয়া হবে বলেও হুমকি দিয়েছে তারা। তবে ওই হামলার দায় অস্বীকার করেছে হিজবুল্লাহ। আর লেবাননে নতুন কোনো অভিযানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলকে সতর্ক করেছে ইরান।
আজ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচার করা অনুষ্ঠানে পেজেশকিয়ানকে অনুমোদন দেওয়ার পর খামেনি বলেন, ইসরায়েল কোনো দেশ নয়। এটি একটি অপরাধী গোষ্ঠী, খুনিদের আশ্রয়দাতা ও সন্ত্রাসী বাহিনী। অন্যদিকে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলকে প্রতিরোধের জন্য হামাসের প্রশংসা করেন খামেনি।
গত মে মাসে এক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। তিনি কট্টরপন্থী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। খামেনির উত্তরসূরি হিসেবেও মনে করা হতো তাঁকে। রাইসির মৃত্যুর পর ইরানে আগাম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আয়োজন করা হয়। দুই দফায় নির্বাচনে জনরায় যায় পেজেশকিয়ানের পক্ষে।
ইরানে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সর্বোচ্চ নেতাই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। তাই মধ্যপ্রাচ্যে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর প্রতি তেহরানের সমর্থনসহ বিভিন্ন নীতিতে পেজেশকিয়ান বড় কোনো পরিবর্তন আনতে পারবেন না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। আর ইরানের আঞ্চলিক নীতি নির্ধারণে জড়িত থাকে ক্ষেত্রে প্রভাবশালী রেভল্যুশনারি গার্ডস। তারা শুধু খামেনির কাছেই জবাবদিহি করে থাকে।
তবে ইরানে অর্থনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে ধর্মীয় নেতাদের নিয়ন্ত্রিত শাসনব্যবস্থা নিয়ে জন অসন্তোষ বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে মাসুদ পেজেশকিয়ানের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক লক্ষ্য হবে, তেহরানের ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা কাটানো। ২০১৫ সালে ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার পর ওই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ওয়াশিংটন।