ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়া বলেছেন, জেরুজালেমে পবিত্র আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলি আগ্রাসনের মুখে তাঁরা হাত গুটিয়ে বসে থাকবেন না।
গতকাল বৃহস্পতিবার লেবাননের রাজধানী বৈরুতে বসে এ কথা বলেন হানিয়া। গতকালই লেবানন থেকে ইসরায়েলের দিকে ৩০টির বেশি রকেট ছোড়া হয় বলে দাবি তেল আবিবের।
রকেট হামলার জন্য ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠনগুলোকে দায়ী করেছে ইসরায়েল। তারা এ রকেট হামলার জবাব সামরিক উপায়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। এরপরই হামাসপ্রধানের কাছ থেকে এমন মন্তব্য এল।
পবিত্র আল-আকসা মসজিদটি পূর্ব জেরুজালেমের ইসরায়েল অধিকৃত ওল্ড সিটিতে অবস্থিত। পবিত্র রমজান মাসে গত বুধবার দুই দফায় মসজিদ প্রাঙ্গণে অভিযান চালায় ইসরায়েলি পুলিশ। অভিযানকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলি পুলিশের সঙ্গে ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের সংঘর্ষ হয়।
আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলি আগ্রাসনের জেরে অন্য ফিলিস্তিনি সংগঠনগুলোর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করতে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে যান হামাস নেতা হানিয়া। গতকাল এ বৈঠক হয়। বৈঠকের পর একটি বিবৃতি দেন তিনি।
হানিয়া তাঁর বিবৃবিতে বলেন, পবিত্র আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসনের মুখে ফিলিস্তিনি জনগণ ও প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো চুপ করে বসে থাকবে না।
ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি সংগঠনগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হতে বলেন হানিয়া। ইসরায়েলি দখলদারির বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরোধ জোরদার করার আহ্বান জানান তিনি।
তেল আবিবের অভিযোগ, ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো লেবানন থেকে ইসরায়েল অভিমুখে ৩৪টি রকেট ছুড়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল রিচার্ড হেচট বলেন, লেবানন থেকে ছোড়া এই রকেট হামলার জন্য ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো দায়ী। রিচার্ড হেচট সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা নিশ্চিতভাবে জানেন, এগুলো ফিলিস্তিনিদের ছোড়া রকেট।
এ রকেট হামাস ছুড়ে থাকতে পারে। আবার ইসলামিক জিহাদও ছুড়ে থাকতে পারে। কারা এ রকেট ছুড়েছে, তা নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছেন তাঁরা। তবে লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ এ রকেট ছোড়েনি।
লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে শিয়া সংগঠন হিজবুল্লাহ। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা শাসন করে হামাস। হামাসের পাশাপাশি গাজা উপত্যকাভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন ইসলামিক জিহাদের সঙ্গে হিজবুল্লাহর ভালো সম্পর্ক রয়েছে।
রকেট হামলার জবাবে গতকাল মধ্যরাতে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এতে বেশ কিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
ইসলামের তৃতীয় পবিত্র স্থান জেরুজালেমের পবিত্র আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলি পুলিশের তাণ্ডবে বিশ্বজুড়ে তীব্র সমালোচনা চলছে। বিশ্বের মুসলিমদের মধ্যে জন্ম দিয়েছে ক্ষোভ। এ আগ্রাসনের জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে বেশ কয়েকটি ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী।