গাজায় হামাসের কাছে জিম্মি ছয়জনের মরদেহ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে ইসরায়েল। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের মরদেহও রয়েছে।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, রাফা এলাকায় ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গের ভেতর গতকাল শনিবার ওই সব মরদেহ খুঁজে পাওয়া যায়।
আইডিএফ নিহত এসব জিম্মির নামও প্রকাশ করেছে। তাঁরা হলেন কারমেল গ্যাট, অ্যাডেন ইয়েরুশালমি, হার্শ গোল্ডবার্গ-পলিন, আলেক্সান্ডার লোভানভ, আলমগ সারুসি ও মাস্টার সার্জেন্ট ওরি ড্যানিনো।
আইডিএফের মুখপাত্র রেয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, ‘প্রাথমিক মূল্যায়ন অনুযায়ী, আমরা সেখানে পৌঁছানোর অল্প সময় আগে হামাস সন্ত্রাসীরা তাঁদের নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে।’
নিহত গোল্ডবার্গ-পলিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়ার পর দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এ খবর শুনে তিনি বিক্ষুব্ধ হয়েছেন।
আজ রোববার দেওয়া ওই বিবৃতিতে আইডিএফ মরদেহগুলো ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ফিরিয়ে নেওয়ার কথাও জানিয়েছে।
আইডিএফ বলেছে, ‘তাঁদের সবাইকে গত বছর ৭ অক্টোবর জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং হামাস গাজা উপত্যকায় তাঁদের হত্যা করেছে।’
নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের এ বিষয়ে অবগত করা হয়েছে বলেও ওই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন এ নিয়ে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘৭ অক্টোবর ইসরায়েলে শান্তির জন্য যে গানের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল, সেখানে নিষ্ঠুর হামলা চালিয়ে যেসব নিরপরাধ মানুষকে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়, হার্শ তাঁদের একজন।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘হামাসের বর্বর গণহত্যার দিন বন্ধুদের এবং অচেনা মানুষদের বাঁচাতে গিয়ে হার্শ তাঁর একটি হাত হারান। তিনি সবে ২৩ বছরে পড়েছিলেন। তিনি পুরো দুনিয়া ভ্রমণ করার পরিকল্পনা করেছিলেন। তাঁর মা–বাবা, জন ও র্যাচেলের সঙ্গে আমার আলাপ হয়েছে। তাঁরা সাহসী ও জ্ঞানী; এমনকি অকল্পনীয় কষ্ট সহ্য করেও অবিচল আছেন। ’
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষকে হত্যা করে হামাস। জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় আরও ২৫১ জনকে।
ওই হামলার প্রতিশোধ নিতে সেদিন থেকেই গাজায় তীব্র হামলা শুরু করে আইডিএফ। ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ৪০ হাজার ৫৩০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সেখানকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
গত বছরের নভেম্বরে গাজায় সাত দিনের যুদ্ধবিরতির সময় হামাস শতাধিক জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছিল।
অন্য জিম্মিদের মুক্তির জন্য যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে উপনীত হওয়ার চেষ্টা চলছে। কিন্তু কয়েক মাস ধরে চেষ্টার পরও এখন পর্যন্ত কোনো সফলতা আসেনি।
এদিকে কয়েক দফায় গাজা থেকে বেশ কয়েকজন জিম্মির মরদেহ উদ্ধার করেছে ইসরায়েল।