রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, গাজায় ইসরায়েলের স্থল অভিযানের ফলে প্রচুর বেসামরিক মানুষ হতাহত হতে পারে, যা হবে ‘একেবারেই অগ্রহণযোগ্য’।
ইসরায়েল গাজা সিটির প্রায় ১১ লাখ বেসামরিক নাগরিককে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজার দক্ষিণাঞ্চলে সরে যেতে বলেছিল। তাদের এই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় পুতিন গতকাল শুক্রবার কিরগিজস্তানের রাজধানী বিশকেকে এক সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
ইতিমধ্যে ইসরায়েল স্থল অভিযানের লক্ষ্যে গাজা সীমান্তে বিপুলসংখ্যক সৈন্য জড়ো করেছে।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, আবাসিক এলাকায় ভারী অস্ত্রের ব্যবহার ‘সব পক্ষের জন্য ভয়াবহ পরিণতি’ ডেকে আনবে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা চালান। দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধ চলছে। সেখানে তাঁর বিরুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার অভিযোগ রয়েছে।
সম্মেলনে পুতিন বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে, বেসামরিক মানুষ হতাহতের বিষয়টি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না। এখন প্রধান কাজ হচ্ছে, রক্তপাত বন্ধ করা।’
পুতিন অবশ্য বলেন, অভূতপূর্ব এই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। তিনি দ্রুত অস্ত্রবিরতি কার্যকর এবং পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে সম্মিলিত উদ্যোগের আহ্বান জানান।
পুতিন বলেন, ‘রাশিয়া গঠনমূলকভাবে সব পক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করতে প্রস্তুত।’
রুশ প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত অবসানে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পথে এগোনো উচিত। এতে পূব৴ জেরুজালেমকে রাজধানী করে ফিলিস্তিন নিজেদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবে।
পুতিন আবারও যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে বলেন, তাদের মধ্যপ্রাচ্য নীতির ব্যর্থতার কারণে বর্তমান দুঃখজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
রাশিয়ার দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েল এবং হামাসসহ ফিলিস্তিনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ইসরায়েলের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাশিয়া অস্ত্রবিরতি চুক্তি করতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানান, যাতে গাজায় খাবার ও ওষুধ পাঠানো যায়। তিনি বলেন, ছোট ও অবরুদ্ধ উপকূলীয় এই অঞ্চলে ‘বাছবিচারহীন’ বোমাবর্ষণ কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, এতে বহু বেসামরিক মানুষ হতাহত হতে পারে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী মিখাইল বাগদানভ আজ মস্কোয় নিযুক্ত লেবানিজ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাঁরা বর্তমান সংকট নিয়ে আলোচনা করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বৈঠকে লেবানন ও ওই অঞ্চলের অন্যান্য দেশে এই সশস্ত্র হামলা ছড়িয়ে পড়া হবে একেবারে অগ্রহণযোগ্য। এতে মানবিক সংকট দেখা দেবে এবং ফিলিস্তিন থেকে দলে দলে শরণার্থীর স্রোত দেখা দেবে।