ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ দেখছেন ফিলিস্তিনিরা। গতকাল খান ইউনিসে
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ দেখছেন ফিলিস্তিনিরা। গতকাল খান ইউনিসে

ইসরায়েলি আগ্রাসন

গাজায় অর্ধেকের বেশি বাড়িঘর ও স্থাপনা ধ্বংস

ফিলিস্তিনের গাজায় প্রায় আট মাস ধরে চলা ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় সেখানকার ৫৫ শতাংশ বাড়িঘর, দোকানপাট ও বিভিন্ন স্থাপনা ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্যাটেলাইট চিত্রের প্রাথমিক বিশ্লেষণের ভিত্তিতে এ তথ্য দিয়েছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘের স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ সংস্থা ইউএনওএসএটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছে, স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা যায়, ১ লাখ ৩৭ হাজারের বেশি ভবন হামলার শিকার হয়েছে।

গতকাল সোমবার স্যাটেলাইটে ধারণ করা চিত্রের ভিত্তিতে আনুমানিক এ হিসাব প্রকাশ করা হয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর এবং ১৫ অক্টোবর তোলা চিত্রের সঙ্গে তুলনা করে ক্ষয়ক্ষতির এ হিসাব প্রকাশ করা হয়।

গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায়। জবাবে ওই দিন থেকেই অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় সর্বাত্মক হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী।

বিবৃতিতে ইউএনওএসএটি বলেছে, স্যাটেলাইট চিত্রে একেবারে ধ্বংস হয়ে যাওয়া ৩৬ হাজার ৫৯১টি অবকাঠামো শনাক্ত করা হয়েছে। ১৬ হাজার ৫১৩টি অবকাঠামো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হালকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৪৭ হাজার ৩৬৮টি অবকাঠামোর। এ ছাড়া আরও ৩৬ হাজার ৮২৫টি অবকাঠামো কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ এবং গাজার উত্তরাঞ্চল।

‘দুর্যোগপূর্ণ এলাকা’

এদিকে উত্তর গাজার জাবালিয়া ও বেইত হানুন এলাকাকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ ঘোষণা করেছে ফিলিস্তিনি পৌর কর্তৃপক্ষ। গত রোববার এ ঘোষণা দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন উত্তর গাজার জরুরি পরিষেবা কমিটির প্রধান নাজি সারহান।

সারহান বলেন, জাবালিয়া শরণার্থীশিবির এবং বেইত হানুন শহর এখন দুর্যোগপূর্ণ এলাকা। গাজা উপত্যকায় ত্রাণ সরবরাহে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করতে জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

গাজার তথ্য দপ্তর জানিয়েছে, পাঁচ বছরের নিচে সাড়ে তিন হাজার শিশু ক্ষুধার কারণে মৃত্যুঝুঁকিতে রয়েছে। খাবারের অভাবে এসব শিশু মারাত্মক পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। এ ছাড়া এসব শিশুকে টিকাদান কর্মসূচির আওতায়ও আনা যায়নি।

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় চুক্তি নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যেই গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। মধ্য গাজা ও রাফায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ২২ জন নিহত হয়েছেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গতকাল জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৪০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১৫০ জন। এ নিয়ে ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ৩৬ হাজার ৪৭৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৮২ হাজার ৭৭৭ জন।

সিরিয়ায় হামলা

গাজার পাশাপাশি সিরিয়ায় ও লেবাননেও হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। গতকাল দিনের শুরুতে উত্তর সিরিয়ার আলেপ্পোর কাছে ইসরায়েলের হামলায় ইরানপন্থী ১৬ যোদ্ধা নিহত হয়েছেন।