অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবি এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ। গতকাল স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে
অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবি এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ। গতকাল স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে

ইসরায়েলি আগ্রাসন

গাজায় গণকবরে ১৮০ মরদেহ

  • ইসরায়েলের জন্য ২৬ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা বিল পাস করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদ।

  • যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্বিবেচনার হুঁশিয়ারি ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের।

ফিলিস্তিনের গাজার খান ইউনিস শহরের নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে একটি গণকবরে ১৮০টি মরদেহের সন্ধান পাওয়া গেছে। ফিলিস্তিনের জরুরি সেবা বিভাগ গণকবরটির খোঁজ পায়। এদিকে ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে গতকাল রোববার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

এ নিয়ে গত কয়েক দিনে গাজায় তৃতীয় গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেল। এর আগে ইসরায়েলি বাহিনী সরে যাওয়ার পর গাজার আল–শিফা হাসপাতাল এবং বেইত লাহিয়া এলাকায় দুটি গণকবরের সন্ধান পাওয়া যায়।

জরুরি সেবা বিভাগ বলেছে, ‘আমাদের দল অবশিষ্ট শহীদদের মরদেহ খুঁজে পেতে সামনের দিনগুলোতেও অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান চালাবে। কেননা, সেখানে (খান ইউনিসে) এখনো উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শহীদের মরদেহ রয়েছে।’

৭ এপ্রিল গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিস থেকে ইসরায়েল সেনাদের প্রত্যাহার করে নেয়। এরপর এ গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেল। কয়েক মাস ধরে ইসরায়েলের বিরামহীন গোলাবর্ষণ ও তাদের সেনাদের সঙ্গে তুমুল লড়াইয়ে শহরটির বড় অংশই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

এর আগে ইসরায়েলি বাহিনী গাজা নগরীর আল–শিফা হাসপাতাল থেকে দুই সপ্তাহের অবরোধ তুলে নিলে ১৫ এপ্রিল সেখানে একটি গণকবরে ১৫টি মরদেহ পাওয়া যায়। এসব মরদেহ ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে নিহত রোগীদের ছিল। চিকিৎসক ও স্বজনেরা মরদেহগুলো শনাক্ত করেন।

হাসপাতালের কর্মীরা বলেন, মার্চে অভিযান চালানোর সময় আল–শিফা হাসপাতালের ফটকের খুব কাছে ইসরায়েলি সেনারা এসব ব্যক্তিকে হত্যা করেন। ওই অভিযানে হাসপাতালটির বেশির ভাগ অংশই ধ্বংস হয়ে যায়।

এ ছাড়া উত্তর গাজার বেইত লাহিয়া এলাকায় একটি গণকবরে ২০টি মরদেহ পাওয়ায় যায়। আবর্জনা ও বালু দিয়ে মরদেহগুলো ঢাকা ছিল। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মরদেহগুলো আল–আসসাফ পরিবারের সদস্যদের।

ধারণা করা হচ্ছে, চার মাসে আগে ওই এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অনুপ্রবেশের সময় এ হত্যাযজ্ঞ ঘটে। ওই এলাকায় স্থাপন করা তল্লাশিচৌকি পার হওয়ার সময় এই পরিবারের সদস্যদের হত্যা করা হয়।

এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গতকাল জানিয়েছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আরও ৪৮ জন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় ৩৪ হাজার ৯৭ ফিলিস্তিনি নিহত হলেন।

ইসরায়েলকে ২৬ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা

গাজায় অব্যাহত হত্যাযজ্ঞের মধ্যেই ইসরায়েলের জন্য ২৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা বিল পাস করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ। স্থানীয় সময় শনিবার একই সঙ্গে ইউক্রেনের জন্য ৬০ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারের সহায়তার আরেকটি বিল পাস হয়।

ইসরায়েলের জন্য পাস হওয়া সহায়তা বিলটির আওতায় ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা প্রদান, আকাশ প্রতিরক্ষব্যবস্থা ঢেলে সাজানো, মানবিক কার্যক্রমে সহায়তা করবে জো বাইডেন প্রশাসন।

ইসরায়েলকে সহায়তা দেওয়ার বিল পাসের নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস। এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, ‘এই সহায়তা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। এটি আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী উগ্রপন্থী সরকারের নৃশংস আগ্রাসন চালিয়ে যাওয়ার লাইসেন্স।’

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্বিবেচনার হুমকি আব্বাসের

এদিকে জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের পূর্ণ সদস্যপদ আটকে দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্বিবেচনার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। গত শনিবার ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ওয়াফাকে তিনি বলেন, ‘আমাদের জনগণের স্বার্থ, দাবি এবং অধিকার রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্বিবেচনা করবে ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব।’

ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা পরিষদে ভোটাভুটিতে ভেটো দেয়

যুক্তরাষ্ট্র। নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের ১২টি প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছিল। ভোটদানে

বিরত ছিল যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ড। তবে স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো প্রয়োগের কারণে প্রস্তাবটি পাস হয়নি।