গাজায় যুদ্ধবিরতি শেষ হতে না হতেই আবার হামলা শুরু

গাজায় ইসরায়েলের হামলার পর ভবন থেকে ধোঁয়া উড়ছে, ১ ডিসেম্বর, ২০২৩
ছবি: এএফপি

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, তারা গাজা উপত্যকায় আবারও হামলা শুরু করেছে। শুক্রবার গাজা নগরীতে বিমান হামলা ও গোলা হামলার খবর পাওয়া গেছে।

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের মধ্যকার যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হয়েছে। নতুন করে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর ব্যাপারে কোনো ঘোষণা এখনো আসেনি। এর মধ্যেই এ হামলা হলো।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, ‘হামাস যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করেছে। পাশাপাশি তারা ইসরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী গাজা উপত্যকায় হামাসের বিরুদ্ধে আবারও হামলা শুরু করেছে।’

এ ঘোষণা দেওয়ার কিছুক্ষণ আগে গাজা উপত্যকা থেকে ছোড়া একটি রকেট প্রতিহত করার দাবি করে ইসরায়েলি বাহিনী।

গাজায় অবস্থানরত এএফপির এক সাংবাদিক বলেছেন, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান থেকে বেশ কয়েকটি হামলা চালানো হয়েছে। গাজা নগরীতেও গোলা হামলার খবর পাওয়া গেছে।

গাজার দক্ষিণাঞ্চল থেকে এএফপির এক প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ওই এলাকায় ড্রোনের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর প্রথমবারের মতো এমন শব্দ পাওয়া যাচ্ছে।

গাজায় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের মধ্যে গত ২৪ নভেম্বর প্রথমবারের মতো চার দিনের যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। প্রথম দফা শেষে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও দুই দিন বাড়াতে একমত হয় দুই পক্ষ। এ যুদ্ধবিরতি শেষ হয় গত বুধবার। এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার আরও এক দিনের জন্য বাড়ে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ। এ মেয়াদ আরও বাড়াতে কাতার ও মিসরের তৎপরতা চলছিল।

৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। ইসরায়েলের ভাষ্যমতে, হামাসের এ হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। এ ছাড়া দুই শতাধিক ব্যক্তিকে ইসরায়েল থেকে ধরে গাজায় নিয়ে জিম্মি করে হামাস। জবাবে ৭ অক্টোবর থেকেই গাজাকে অবরুদ্ধ করে নির্বিচার বোমা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। পাশাপাশি তারা গাজায় স্থল অভিযানও চালাতে থাকে।

গাজা সরকারের তথ্যানুযায়ী, অবরুদ্ধ উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলায় প্রায় ১৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাঁদের বেশির ভাগই বেসামরিক লোকজন।

গাজায় ইসরায়েলের টানা ৫১ দিনের হামলার পর গত ২৪ নভেম্বর থেকে চার দিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এ যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র। এরপর দুই দফায় বাড়ানো হয় সেই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ।

তবে গাজায় নতুন করে লড়াই শুরু হওয়ায় নতুন করে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ার আশা ফিকে হয়ে গেছে।

৭ দিনের যুদ্ধবিরতি চলাকালে হামাস ১০৫ জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে। এর মধ্যে ৮০ জন ইসরায়েলি নাগরিক এবং অন্যরা বিদেশি। বিনিময়ে ২৪০ জন ফিলিস্তিনি কারাবন্দী মুক্তি পেয়েছেন। এ ছাড়া যুদ্ধবিরতির আওতায় ত্রাণবাহী গাড়িকে গাজা উপত্যকায় ঢুকতে দিয়েছে ইসরায়েল।