হামাসপ্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার
হামাসপ্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার

সিনওয়ারের মরদেহ কী করবে ইসরায়েল

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ গত বৃহস্পতিবার হামাসপ্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে। তবে তাঁর মরদেহ কোথায় আছে এবং তা কী করা হবে, সেটি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

গাজার দক্ষিণাঞ্চলে একটি লড়াই চলাকালে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন সিনওয়ার। তাঁর মরদেহের ময়নাতদন্তের তদারকি করেছেন ইসরায়েলের ন্যাশনাল ফরেনসিক ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. চেন কুগেল। গত শুক্রবার নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ময়নাতদন্ত শেষে সিনওয়ারের মরদেহ ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে তা কোথায় রাখা হয়েছে, সে বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।

ইসরায়েল সাধারণত ফিলিস্তিনিদের মরদেহ সংরক্ষণ করে রাখে, যাতে পরবর্তী সময়ে হামাস বা অন্যান্য সশস্ত্র সংগঠনের সঙ্গে সেগুলো নিয়ে বন্দিবিনিময় করা যায়। একই কাজ (ইসরায়েলি সেনাদের মরদেহ সংরক্ষণ) করে হামাসও। দেখা যাক, ইসরায়েল সিনওয়ারের মরদেহ নিয়ে এখন কী করে—সেটি রেখে দেয়, হামাসের কাছে ফিরিয়ে দেয়, নাকি কবর দেয়।

এ বিষয়ে তথ্য দিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীকে অনুরোধ করা হয়েছিল, কিন্তু তারা মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

ইসরায়েল সাধারণত ফিলিস্তিনিদের মরদেহ সংরক্ষণ করে রাখে, যাতে পরবর্তী সময়ে হামাস বা অন্যান্য সশস্ত্র সংগঠনের সঙ্গে সেগুলো নিয়ে বন্দিবিনিময় করা যায়। একই কাজ (ইসরায়েলি সেনাদের মরদেহ সংরক্ষণ) করে হামাসও। এখন দেখা যাক, ইসরায়েল সিনওয়ারের মরদেহ নিয়ে কী করে—তারা সেটি রেখে দেয়, হামাসের কাছে ফিরিয়ে দেয়, নাকি কবর দেয়।
আমার মনে হচ্ছে, একটি অজ্ঞাত স্থানে তাঁকে (সিনওয়ার) দাফন করা হবে।
-জন বি অল্টারম্যান, সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক কর্মসূচির পরিচালক

বিশেষজ্ঞদের কাছে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁরা বলেন, সিনওয়ারের মরদেহ কোথাও কবর দেওয়া হবে এবং সেই স্থানটি একসময় মাজারে পরিণত হবে—এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি করতে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা সম্ভবত দেবেন না।

ওয়াশিংটনে সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক কর্মসূচির পরিচালক জন বি অল্টারম্যান বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে, একটি অজ্ঞাত স্থানে তাঁকে (সিনওয়ার) দাফন করা হবে।’

হামাসপ্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার হত্যা নিয়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী একটি ফুটেজ প্রকাশ করে। তারা বলে, ফুটেজে যে ব্যক্তিকে চেয়ারে বসে থাকতে দেখা যায়, তিনি হামাসপ্রধান সিনওয়ার। ছবিটি ভিডিও থেকে নেওয়া

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ও আল–কায়েদার প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে ২০১১ সালে হত্যা করা হয়। মার্কিন সেনারা বিন লাদেনকে হত্যা করার পর দ্রুত মুসলিম নিয়ম মেনে কবরস্থ করেন।

গত জুলাই মাসের শেষ দিকে ইরানে ইসরায়েলের হামলায় নিহত হন হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া। ইসরায়েল তাঁর মরদেহ হাতে পায়নি। হানিয়াকে কাতারের রাজধানী দোহায় কবর দেওয়া হয়েছে। হানিয়ার মরদেহ যখন নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন শত শত মানুষ হানিয়ার কফিন যে রাস্তা দিয়ে গেছে, তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে শোক প্রকাশ করেন। তাঁদের হাতে ছিল ফিলিস্তিনের পতাকা।

ডা. চেন কুগাল বলেন, সিনওয়ারের মৃত্যুর ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টা পর মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। তিনি মৃত্যুর সঠিক সময় বলতে পারেননি।

এদিকে সিনওয়ারকে ইসরায়েলে কবর দেওয়া হতে পারে, বলছেন অল্টারম্যান।

গত জুলাই মাসের শেষ দিকে ইরানে ইসরায়েলের হামলায় নিহত হন হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া। ইসরায়েল তাঁর মরদেহ হাতে পায়নি। হানিয়াকে কাতারের রাজধানী দোহায় কবর দেওয়া হয়েছে। হানিয়ার মরদেহ যখন নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন শত শত মানুষ হানিয়ার কফিন যে রাস্তা দিয়ে গেছে তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে শোক প্রকাশ করেন। তাঁদের হাতে ছিল ফিলিস্তিনের পতাকা।