রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের উপায় খুঁজতে সৌদি আরবের বন্দরনগরী জেদ্দায় আলোচনা শুরু হয়েছে।
জেদ্দার এ আলোচনায় প্রায় ৪০টি দেশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা অংশ নিচ্ছেন। তবে এ আলোচনায় রাশিয়া নেই।
দুই দিনের আলোচনা গতকাল শনিবার শুরু হয়। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের কীভাবে অবসান ঘটানো যায়, সে বিষয়ে মূলনীতির একটি খসড়া তৈরি করাই এ আলোচনার লক্ষ্য।
বিভিন্ন দেশের এ আলোচনা শুরুর আগের দিন একে স্বাগত জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
আলোচনায় বিশ্বের বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশ অংশ নিচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় এই দেশগুলো সবচেয়ে ভোগান্তির মধ্যে রয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি গত শুক্রবার বলেন, খাদ্যনিরাপত্তাসহ বিভিন্ন কারণে এ আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শান্তির সূত্র (ফর্মুলা) বাস্তবায়নে বিশ্ব কত দ্রুত অগ্রসর হয়, তার ওপর আফ্রিকা, এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অংশের লাখো মানুষের ভাগ্য সরাসরি নির্ভর করছে।
জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় হওয়া কৃষ্ণসাগর শস্য চুক্তি থেকে গত মাসে বেরিয়ে যায় রাশিয়া। এ চুক্তির ফলে ক্ষুধার সঙ্গে লড়াইরত বিশ্বের বেশ কিছু অংশে ইউক্রেনীয় পণ্যের চালান পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছিল।
আসন্ন শরতে ইউক্রেন নিয়ে বিশ্বনেতাদের একটি ‘শান্তি সম্মেলন’ হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী জেলেনস্কি। এ লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হওয়ার ক্ষেত্রে জেদ্দার আলোচনাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে দেখছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। তাঁর আশা, কিয়েভের ১০ দফা শান্তি সূত্রের ভিত্তিতে জেদ্দার আলোচনায় শান্তির খসড়া মূলনীতি তৈরি হবে।
কিয়েভের ১০ দফা শান্তি সূত্রের মধ্যে রয়েছে ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধা, মস্কোর দখল করা অঞ্চলগুলোকে থেকে রুশ সৈন্য প্রত্যাহার।
ইউক্রেনের শান্তির সূত্র আগেই প্রত্যাখ্যান করেছে রাশিয়া। এ ছাড়া রাশিয়াকে বাদ দিয়েই জেদ্দায় আলোচনা হচ্ছে।
জেদ্দার আলোচনা সম্পর্কে ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা এ বৈঠকের ওপর নজর রাখবে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ গত সপ্তাহের শুরুতে বলেছিলেন, জেদ্দায় কী আলোচনা হয়, কী লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়, তা রাশিয়াকে বুঝতে হবে। শান্তিপূর্ণ মীমাংসার যেকোনো প্রচেষ্টা ইতিবাচক মূল্যায়নের দাবি রাখে।
আল-জাজিরার স্টেপ ভ্যাসেন কিয়েভ থেকে জানিয়েছেন, জেদ্দা সম্মেলনটি ইউক্রেনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ভারত, ব্রাজিলসহ নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকা দেশগুলোর কাছে কিয়েভের পৌঁছানোর একটি সুযোগ করে দিয়েছে এ সম্মেলন।
সম্মেলনটি বিশেষ করে এ জন্য গুরুত্বপূর্ণ যে এখানে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র চীন অংশ নিচ্ছে। স্টেপ ভ্যাসেন বলেন, ইউক্রেনের আশা, জেলেনস্কির শান্তি পরিকল্পনাকে চীন সমর্থন করবে।