ইসরায়েলের স্থল অভিযানের আশঙ্কায় রাফা ছাড়ছেন ফিলিস্তিনিরা। রাফা, গাজা, ফিলিস্তিন, ১২ ফেব্রুয়ারি
ইসরায়েলের স্থল অভিযানের আশঙ্কায় রাফা ছাড়ছেন ফিলিস্তিনিরা। রাফা, গাজা, ফিলিস্তিন, ১২ ফেব্রুয়ারি

রাফায় ইসরায়েলি হামলা ‘হত্যাযজ্ঞ’ ঘটাতে পারে, জাতিসংঘের সতর্কতা

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার দক্ষিণতম শহর রাফায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা ব্যাপক ‘হত্যাযজ্ঞ’ ঘটাতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তা মার্টিন গ্রিফিথস।

জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা ও জরুরি ত্রাণবিষয়ক সমন্বয়কারী মার্টিন গ্রিফিথস বলেন, ‘গাজায় ফিলিস্তিনিরা ইতিমধ্যেই এমন সব হামলার শিকার হয়েছে, যেসবের তীব্রতা, বর্বরতা ও পরিধির সঙ্গে কোনো কিছুর তুলনা চলে না।’

এ পরিস্থিতিতে রাফায় ব্যাপক হামলার পরিণতি ‘বিপর্যয়কর’ হতে পারে, এমনটাই বলেছেন মার্টিন গ্রিফিথস।

ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাসের বন্দুকধারীরা রাফা শহরে লুকিয়ে আছেন উল্লেখ করে তাঁদের পরাজিত করার অঙ্গীকার করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

এক বিবৃতিতে মার্টিন গ্রিফিথস বলেন, রাফায় ১০ লাখের বেশি মানুষ আটকা পড়ে আছে। তাঁরা সবাই মৃত্যুর দিকে তাকিয়ে আছে। শহরটির বেসামরিক মানুষদের কাছে খুব অল্প পরিমাণ খাবার আছে। তাঁদের চিকিৎসা পাওয়ার সুযোগও সীমিত। তাঁদের যাওয়ার জন্য কোনো নিরাপদ জায়গা নেই।

জাতিসংঘের জরুরি ত্রাণবিষয়ক সমন্বয়কারী মার্টিন গ্রিফিথসকে এমন কড়া ভাষায় বিবৃতি দিতে সচরাচর দেখা যায় না।

মার্টিন গ্রিফিথস আরও বলেন, সেখানে মানবিক সহায়তার তৎপরতা এমনিতেই খুব নাজুক অবস্থায় আছে। ইসরায়েলের দখল সেটাকে মৃত্যুর দুয়ারে ঠেলে দেবে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বিবিসির নিউজআওয়ার অনুষ্ঠানে জানান, ইসরায়েলের পক্ষ থেকে রাফায় মানুষজনকে সরিয়ে নেওয়ার কোনো পরিকল্পনার খবর জাতিসংঘ এখনো পায়নি। জোরপূর্বক সরিয়ে নেওয়ার কোনো প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘ যুক্ত হবেও না।

স্টিফেন ডুজারিক সরাসরি বলেছেন, মানুষকে জোরপূর্বক সরিয়ে নেওয়ার কোনো পরিকল্পনার অংশ হবে না জাতিসংঘ।

গাজা উপত্যকার দক্ষিণের ছোট একটি শহর রাফা। শহরটি মিসরের সীমানা লাগোয়া। গত বছরের অক্টোবরে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল সংঘাত শুরুর আগে রাফায় প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বসবাস করতেন। তবে সংঘাত শুরুর পর ইসরায়েল যখন গাজার দক্ষিণাঞ্চল খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দেয়, এরপর রাফায় মানুষের সংখ্যা ১৫ লাখে পৌঁছে যায়।

রাফায় এখন অনেকেই তাঁবুতে বসবাস করছেন। অনেকেই বলছেন, তাঁদের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই।

ইসরায়েলি বাহিনী সম্প্রতি রাফায় হামলা জোরদার করেছে। শহরটিতে গত সোমবার ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬৭ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।