ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে যুক্তরাষ্ট্র অনীহা জানিয়ে আসছে বারবার। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, আলোচনার মাধ্যমে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র অর্জন করা উচিত। একতরফা স্বীকৃতির মাধ্যমে নয়। এ মাসের মধ্যেই আয়ারল্যান্ড, স্পেন ও নরওয়ের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় গত বুধবার বাইডেন এ কথা বলেন।
ইউরোপের তিনটি দেশের সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্র যে খুশি হতে পারেনি, ওয়াশিংটনের প্রতিক্রিয়া তারই ইঙ্গিত দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান হোয়াইট হাউসের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বলেন, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি প্রতিটি দেশের নিজস্ব সিদ্ধান্তের বিষয়। তবে বাইডেন মনে করেন, পক্ষগুলোর সরাসরি আলোচনা সেরা পদ্ধতি।
আমরা বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছি। সেনারা যেখানে আক্রমণ করেছে, সেখান থেকে কালো ধোঁয়া উঠছে। এটি আরেকটি কঠিন রাত ছিল।’রাফার এক বাসিন্দা
জ্যাক সুলিভান আরও বলেন, বাইডেন সেই দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানে বিশ্বাস করেন, যা ইসরায়েলের নিরাপত্তা ও মর্যাদার ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা দেয় এবং ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
এদিকে আয়ারল্যান্ড, স্পেন ও নরওয়ের পথ ধরে একই দিনে কলম্বিয়াও ফিলিস্তিনের স্বীকৃতিকে আরও একধাপ এগিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। বুধবার কলম্বিয়া বলেছে, ফিলিস্তিনের রামাল্লায় দূতাবাস খুলবে তারা। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুইস মুরিলো বলেন, কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভ পেত্র পশ্চিম তীরের রামাল্লায় দূতাবাস স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ ধরনের পদক্ষেপ সন্ত্রাসের জন্য পুরস্কার হিসেবে কাজ করে এবং ইসরায়েলে কোনো শান্তি আনবে না।ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু
এদিকে ফিলিস্তিনের রাফায় হামলা বন্ধে বিশ্ব যখন সমালোচনা করছে, তখন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের সাফাই গাইছে। বুধবার হোয়াইট হাউস বলেছে, ইসরায়েল এখন পর্যন্ত রাফায় নির্দিষ্ট লক্ষ্যেই কেবল হামলা করছে। এ মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য ইসরায়েলকে সতর্ক করে বলেছিল যে রাফায় হামলা হলে তিনি অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেবেন।
এদিকে ইউরোপের তিন দেশের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ সন্ত্রাসের জন্য পুরস্কার হিসেবে কাজ করে এবং ইসরায়েলে কোনো শান্তি আনবে না।
গতকাল বৃহস্পতিবারও গাজার উত্তর–মধ্য ও রাফায় ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। তাদের হামলায় গতকাল ৩৫ জন নিহত হয়েছে। সেখানকার বাসিন্দারা বলছেন, ইসরায়েলি ট্যাংকবহর রাফার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়েছে। শহরের পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা ইবনার দিকে ব্যাপক হামলা চালানো হচ্ছে। যে এলাকায় তারা হামলা করছে, সেটি ব্যাপক জনবহুল এলাকা।
সেখানকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমরা বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছি। সেনারা যেখানে আক্রমণ করেছে, সেখান থেকে কালো ধোঁয়া উঠছে। এটি আরেকটি কঠিন রাত ছিল।’
গাজায় জাতিসংঘের প্রধান সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ সোমবার বলেছে, ইসরায়েল মে মাসের শুরুতে রাফা শহরটিকে লক্ষ্যবস্তু করার পর থেকে আট লাখের বেশি মানুষ শহর ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।