প্রথমে পেজার, পরে ওয়াকিটকিসহ অন্যান্য ডিভাইস বিস্ফোরণে লেবাননজুড়ে আহত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। যাঁদের অনেকের ক্ষতই গভীর। এমন অবস্থায় হাসপাতালে কেমন ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে, তা উঠে এসেছে একজন শল্যচিকিৎসকের (সার্জন) বয়ানে। তাঁর ভাষায়, ডানে-বাঁয়ে তাকানোর সময় ছিল না, কাটাছেঁড়া সামাল দিতে তাঁকে শুধু ‘রোবটের’ মতো কাজ করে যেতে হয়েছে।
ওই চিকিৎসকের নাম ইলিয়াস জারদেহ। তিনি দেশটির একজন আইনপ্রণেতাও (এমপি)। তিনি মূলত আহত নারী ও শিশুদের চিকিৎসা করেছেন। তবে আহত অন্য ব্যক্তিদের বেশির ভাগই তরুণ বলে তিনি জানিয়েছেন। ইলিয়াস বলেন, একটি বড় অংশ ছিল গুরুতর আহত। অনেকে তাঁদের দুই চোখের দৃষ্টিশক্তিই হারিয়েছেন।
হতাহত ব্যক্তিদের মধ্যে হিজবুল্লাহ যোদ্ধা, তাঁদের পরিবারের সদস্য ও পথচারীরা রয়েছেন। ইলিয়াসের কাছে মনে হয়েছে, তিনি যাঁদের চিকিৎসা দিয়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক।
লেবাননে এই বিস্ফোরণে দুই শিশুসহ ৩৭ জন নিহত এবং ৩ হাজার ২০০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনার জন্য ইসরায়েলের সম্পৃক্ততাকে দায়ী করা হচ্ছে। তবে তারা এর দায় স্বীকার করেনি।
ইলিয়াস জারদেহ কাজ করেন চোখ ও কানের একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে। সেখানে পাঠানো আহত ব্যক্তিদের অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, রোগীদের সামাল দেওয়া ছিল সত্যি কঠিন। এর কঠিন প্রভাব পড়েছে হাসপাতালের পুরো চিকিৎসক দলের ওপর।
ইলিয়াসের ভাষায়, আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা দিতে গেয়ে তাঁদের নিজেকে পরিবারের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে হয়েছে। যেন তাঁরা রোবটের মতো কাজ করে গেছেন। ভেতরে–ভেতরে তাঁরা গভীরভাবে আহত হয়েছেন। তাঁরা দেখছেন, তাঁদের পুরো জাতি আহত।