তেহরানে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার ঘটনায় ইরান ইসরায়েলকে দায়ী করে দেশটিতে হামলার যে হুমকি দিয়েছে, সেখান থেকে তেহরানকে ‘পিছু হটতে’ বলেছে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের ইউরোপীয় মিত্ররা। তারা বলেছে, ইসরায়েলে হামলা চালানো হলে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হতে পারে।
গত ৩১ জুলাই হামাসপ্রধান হানিয়া গুপ্তহত্যার শিকার হওয়ার খবর প্রকাশিত হয়। তাতে বলা হয়, তেহরানে তিনি যে অতিথিশালায় অবস্থান করছিলেন, সেখানে স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।
ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হানিয়া তেহরানে গিয়েছিলেন। তাঁর নিহত হওয়ার ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে বৈরুতে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর একজন শীর্ষ কমান্ডারকে হত্যা করে ইসরায়েল। পরপর এ দুই নেতাকে হত্যায় প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইরান ও তার মিত্র হিজবুল্লাহ।
এদিকে ওই হুমকির প্রেক্ষাপটে ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েলের পক্ষে নিজেদের সমর্থন দেখাতে দ্রুত ক্ষেপণাস্ত্রবাহী ডুবোজাহাজ ও বিমানবাহী রণতরি ওই অঞ্চলে পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
গাজায় যুদ্ধ চলাকালেই ইরান-ইসরায়েল মুখোমুখি অবস্থানে চলে যায়। এতে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের উত্তেজনা বেড়েছে। এখন এ উত্তেজনা ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক মহল থেকে ইরানকে প্রতিশ্রুত হামলা করা থেকে বিরত রাখার জোর চেষ্টা চলছে।
গতকাল সোমবার যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে তেহরানকে এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়। বিবৃতিটি দেওয়ার আগে তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা ইরানকে ইসরায়েলে সামরিক হামলা চালানোর হুমকি থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছি এবং এ ধরনের হামলা হলে আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য সেটা কতটা গুরুতর পরিণতি বয়ে নিয়ে আসতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা করেছি।’
হোয়াইট হাউস সতর্ক করে বলেছে, ইরান ও তাদের সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো দ্রুতই ইসরায়েলে ‘উল্লেখযোগ্য হামলা’ চালাতে পারে। একই ধারণা পোষণ করে ইসরায়েল।
জার্মানি ও যুক্তরাজ্য ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানকে এ পরিস্থিতিতে উত্তেজনা প্রশমন করতে বলেছে।
গতকাল পেজেশকিয়ান বলেছেন, ওই আক্রমণের জবাব দেওয়ার অধিকার তাঁর দেশের রয়েছে।