ইরানে পুলিশি হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গতকাল বৃহস্পতিবারও দেশটির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ অব্যাহত থেকেছে। নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) বলছে, প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলা এ বিক্ষোভে এ পর্যন্ত ৮৩ জন নিহত হয়েছে। খবর রয়টার্সের।
কঠোর ‘পর্দাবিধি’ মেনে হিজাব না পরার অভিযোগে ১৩ সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সী কুর্দি তরুণী মাসা আমিনিকে তেহরান থেকে আটক করে ‘নীতি পুলিশ’। আটকের পর পুলিশি হেফাজতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে তেহরানের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নির্যাতনে মাসার মৃত্যু হয়েছে দাবি করে ইরানের মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন।
২০১৯ সালের পর এটি ইরানের রাস্তায় হওয়া সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। ২০১৯ সালে পেট্রলের দাম বাড়ার প্রতিবাদে দেশটিতে বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়েছিল।
মানবাধিকার সংগঠন ইরান হিউম্যান রাইটস এক টুইটার পোস্টে বলেছে, ‘ইরানের বিক্ষোভে শিশুসহ কমপক্ষে ৮৩ জন নিহত হয়েছে।’
টুইটারে পোস্ট করা বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, ইরানে ইসলামি প্রজাতন্ত্রের পতন দাবি করে তেহরান, কুম, রাশত, সানন্দাজ, মাসজেদ-ই সুলেইমানসহ অন্য শহরগুলোয় বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভে নিহত মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভকারীদের ওপর ব্যাপক দমনপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে।
বিক্ষোভকারীদের ‘দাঙ্গাবাজ’ হিসেবে উল্লেখ করে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, পুলিশ বিপুলসংখ্যক ‘দাঙ্গাবাজ’কে গ্রেপ্তার করেছে। তবে গ্রেপ্তার মানুষের সংখ্যা কত, তা সুনির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি।
গতকাল বৃহস্পতিবার জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তিনি চান মাসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় ইরানের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়ন অবরোধ আরোপ করুক।
মাসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নরওয়ের অসলোতেও বিক্ষোভ হয়েছে। বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী ইরানি দূতাবাসে ঢোকার প্রচেষ্টা চালিয়েছে। নরওয়ের পুলিশের ভাষ্য, ওই সময়ে দুই ব্যক্তি হালকা আহত হয়েছে। নরওয়ের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম এনআরকে’র প্রতিবেদনে বলা হয়, পুলিশ বিক্ষোভ থেকে ৯৫ জনকে আটক করেছে।