গাজায় যুদ্ধবিরতির সমঝোতায় না পৌঁছানো পর্যন্ত আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির দাবি এড়িয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছে সংগঠনটি। এদিকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ২৪ ঘণ্টায় আরও ৮৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
পবিত্র রমজান মাসের আগেই গাজায় ৪০ দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য মিসরের কায়রোতে রোববার আরেক দফা আলোচনা শুরু হয়েছে। এতে হামাসের পাশাপাশি মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারীরা অংশ নিয়েছেন।
তবে জীবিত জিম্মিদের নতুন তালিকা দেওয়ার শর্ত জুড়ে দিয়ে এ আলোচনায় প্রতিনিধিদল পাঠায়নি ইসরায়েল। হামাস বলছে, জিম্মিরা গাজার বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে একাধিক গোষ্ঠীর হাতে আটক রয়েছেন। যুদ্ধ বন্ধ না হলে এ নিয়ে তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে হামাস বলেছে, যুদ্ধবিরতির সমঝোতায় পৌঁছাতে মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে ইসরায়েলের সঙ্গে তারা আলোচনা চালিয়ে যাবে। সংগঠনটি বলেছে, ‘আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে চলা আগ্রাসন সম্পূর্ণভাবে অবসানে প্রয়োজনীয় নমনীয়তা আমরা দেখাচ্ছি। কিন্তু এখনো দখলদারেরা (ইসরায়েল) চুক্তির দাবিগুলো এড়িয়ে যাচ্ছে।’
হামাসের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, গাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের তাঁদের বাড়িঘরে ফিরতে দেওয়া, গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং সেখানে ত্রাণ প্রবেশের সুযোগ দেওয়া।
খাবার ও পানির অভাবে গাজার মানবিক পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। এ অবস্থায় যুদ্ধবিরতিতে রাজি হতে ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলো।
রমজানের আগে গাজায় যুদ্ধবিরতি না হলে ‘খুবই বিপজ্জনক’ পরিস্থিতি হবে বলে সতর্ক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বাইডেন একই সঙ্গে বলেন, যুদ্ধবিরতির চুক্তিটি গ্রহণের বিষয়টি হামাসের ওপর নির্ভর করছে।
গাজায় দ্বিতীয়বারের মতো উড়োজাহাজ থেকে ত্রাণ ফেলেছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। মিত্র ইসরায়েলের উদ্দেশে বাইডেন বলেন, গাজায় আরও সহায়তা পৌঁছাতে না দেওয়া নিয়ে কোনো অজুহাত চলবে না।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান মনোনয়নপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজায় ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানতে চাওয়া হয় ইসরায়েল যে কায়দায় অভিযান চালাচ্ছে, তা তিনি সমর্থন করেন কি না। জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আপনাকে সমস্যাটা শেষ করতে হবে’।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৬ জন নিহত হয়েছেন বলে আজ বুধবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এ নিয়ে ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩০ হাজার ৭১৭ দাঁড়িয়েছে। নিহত ফিলিস্তিনিদের ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু।