ইসরায়েলি হামলায় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাহায্য সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের বিধ্বস্ত গাড়িটি পর্যবেক্ষণ করছেন জাতিসংঘের কর্মীরা। গতকাল গাজায়
ইসরায়েলি হামলায় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাহায্য সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের বিধ্বস্ত গাড়িটি পর্যবেক্ষণ করছেন জাতিসংঘের কর্মীরা। গতকাল গাজায়

গাজায় ত্রাণকর্মী নিহতের ঘটনায় দুই সেনা কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করল ইসরায়েল

ফিলিস্তিনের গাজায় ড্রোন হামলায় সাত ত্রাণকর্মী নিহতের ঘটনায় দুই জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।

বরখাস্ত হওয়া দুই সেনা কর্মকর্তা হলেন ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর কর্নেল পদমর্যাদার একজন ব্রিগেড চিফ অব স্টাফ এবং অন্যজন মেজর পদমর্যাদার ব্রিগেড ফায়ার সাপোর্ট অফিসার। এ ছাড়া ড্রোন হামলায় ত্রাণকর্মী নিহতের ঘটনায় একাধিক জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে তিরস্কার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ডের প্রধানও রয়েছেন।

গত সোমবার গাজার মধ্যাঞ্চলের দেইর আল–বালা এলাকায় ইসরায়েলের ড্রোন হামলায় দাতব্য সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের (ডব্লিউসিকে) সাতজন ত্রাণকর্মী নিহত হন। মিত্রদেশসহ আন্তর্জাতিক চাপের মুখে এ ঘটনা নিয়ে তদন্তের পর শুক্রবার দুজন সেনা কমান্ডারকে বরখাস্ত করল ইসরায়েল। তদন্তে তাঁদের বিরুদ্ধে মারাত্মক ভুল ও বিধি লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর দাবি, গত সোমবার মধ্যরাতে ডব্লিউসিকের তিনটি গাড়ি নিশানা করে ভুলবশত ড্রোন হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এসব গাড়িতে হামাসের সশস্ত্র যোদ্ধা রয়েছেন ধারণা করে এ হামলা চালানো হয়। তবে এ ক্ষেত্রে যেসব বিধি মানার কথা তা মানা হয়নি।

বিবৃতিতে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, ত্রাণকর্মীদের বহনকারী গাড়িতে এ হামলা ছিল একটি মারাত্মক ভুল। ভুলভাবে পরিচয় শনাক্ত, সিদ্ধান্ত গ্রহণপ্রক্রিয়ায় গাফিলতি ও আদর্শ পরিচালন পদ্ধতি (এসওপি) না মেনে এ হামলা করা হয়।

ইসরায়েলের হামলায় নিহত সাত ত্রাণকর্মীর মধ্যে তিনজন ব্রিটিশ, একজন ফিলিস্তিনি, একজন অস্ট্রেলিয়া, একজন পোল্যান্ডের ও একজন যুক্তরাষ্ট্র–কানাডার দ্বৈত নাগরিক। ইসরায়েলের হামলায় ত্রাণকর্মী নিহত হওয়ার এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা। ইসরায়েলের মিত্র হিসেবে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্রও এ হামলার কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

ত্রাণকর্মী নিহতের এ ঘটনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। নেতানিয়াহুকে বাইডেন সতর্ক করে বলেছেন, বেসামরিক লোকজনের সুরক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে ইসরায়েলকে অস্ত্র ও সহায়তা দেওয়া বন্ধ করবে যুক্তরাষ্ট্র।

এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন শুক্রবার বলেছেন, ইসরায়েলের তদন্ত সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে ওয়াশিংটন। ইসরায়েল কী পদক্ষেপ নিয়েছিল, সেটাও ভালোভাবে খতিয়ে দেখা হবে।