কিউবার পশ্চিম প্রান্তে হারিকেন ইয়ান আঘাত হানার পর দেশটি পুরোপুরি বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। কিউবা সরকারের পক্ষ থেকে গতকাল মঙ্গলবার এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। খবর বিবিসির।
কিউবা উপকূলে গত সোমবার রাতে ঘণ্টায় ১৯৫ কিলোমিটার বেগে তিন মাত্রার হারিকেন ইয়ান আঘাত হানে। এতে এক ব্যক্তির মৃত্যু এবং বেশ কিছু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) বলেছে, হারিকেনটি এখন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আজ বুধবার রাত নাগাদ এটি ফ্লোরিডার পশ্চিম উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
গতকাল কিউবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া বক্তব্যে দেশটির বৈদ্যুতিক জ্বালানি কর্তৃপক্ষের প্রধান ঘোষণা করেছেন, জাতীয় বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার কারণে দেশজুড়ে বিদ্যুতের সংকট দেখা দিয়েছে। এতে ১ কোটি ১০ লাখ মানুষ অন্ধকারের মধ্যে পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, প্রধান বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর একটিকে সচল করতে না পারায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।
কিউবার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থায় কাজ করা এক সাংবাদিক বলেছেন, দেশের বৈদ্যুতিক সার্কিটগুলো পুরোপুরি অকার্যকর হয়ে পড়েছে। আন্তোনিও গিতেরাস নামের থার্মো ইলেকট্রিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটিও সচল করা যায়নি।
আন্তোনিও গিতেরাস কিউবার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি কেন্দ্র। রাজধানী হাভানা থেকে ১০০ কিলোমিটার পূর্বের এলাকা মাতানজাসে এর অবস্থান। এটি বন্ধ থাকার মানে হলো, বর্তমানে দ্বীপরাষ্ট্রটিতে কোনো ধরনের বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে না।
গত মাসে আগুন লেগে মাতানজাসের জ্বালানি কেন্দ্রটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে জ্বালানি সংরক্ষণ সক্ষমতা অর্ধেক কমে যাওয়ায় বিদ্যুতের সংকটে পড়ে কিউবা।
আবহাওয়াবিদেরা আভাস দিয়েছেন, হারিকেন ইয়ানের কারণে কিউবার কিছু অঞ্চলে ৩০ সেন্টিমিটার (১২ ইঞ্চি) পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে।
সোমবার রাতে কিউবায় ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার সময়ের কথা স্মরণ করে পিনার দেল রিওর বাসিন্দা মায়েলিন সুয়ারেজ বলেন, এটি তাঁর জীবনের অন্ধকারতম রাত ছিল।
সুয়ারেজ বলেন, ‘আমাদের ঘরের চাল প্রায় উড়ে যাওয়ার অবস্থা হয়েছিল। আমি, আমার মেয়ে ও আমার স্বামী মিলে এটি দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছিলাম, যেন উড়ে না যায়।’
এনএইচসি আভাস দিয়েছে, ইয়ান তিন মাত্রা থেকে চার মাত্রার হারিকেনে রূপান্তরিত হয়ে ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের পশ্চিম উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এর গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৩০ মাইল। ফ্লোরিডার প্রায় ২৫ লাখ মানুষকে নিরাপদে সরে যেতে বলা হয়েছে।
ফ্লোরিডায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন স্থানীয় গভর্নর।