জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, ফিলিস্তিনের গাজায় ত্রাণের জন্য মরিয়া মানুষের কাছে সহায়তা পৌঁছে দিতে ‘পদ্ধতিগতভাবে’ বাধা তৈরি করছে ইসরায়েল। সেই সঙ্গে সতর্ক করে বলা হয়েছে, জরুরি পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে অবরুদ্ধ গাজার এক–চতুর্থাংশ মানুষ দুর্ভিক্ষ থেকে এক ধাপ দূরে রয়েছে।
গাজার উত্তরাঞ্চলে খাবার সংগ্রহ করতে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনী আবারও গুলি করছে, এমন একটি ভিডিও ফুটেজ গতকাল মঙ্গলবার অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে। এর পরপরই জাতিসংঘের কর্মকর্তারা এমন সতর্কবার্তা দিয়েছেন।
অসহায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর গুলি ছোড়ার ঘটনায় কেউ হতাহত হয়েছেন কি না, প্রাথমিকভাবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলার পাঁচ মাস চলছে। নিহতের সংখ্যা ৩০ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। তাঁদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। ইসরায়েলি ভূখণ্ডে গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর এ যুদ্ধের শুরু। ওই হামলায় হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। হামাসের হাতে জিম্মি হন প্রায় আড়াই শ মানুষ।
প্রতিদিন শুধু আকাশপথে হামলা নয়, গাজার উত্তরাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে বড় পরিসরে স্থল অভিযানও চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। সেই সঙ্গে গাজায় প্রবেশ ও বের হওয়ার প্রায় সবগুলো পথ (চেকপয়েন্ট) অবরোধ করে রাখা হয়েছে। এর ফলে গাজায় মানবিক সংকট জোরালো হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক সংস্থার (ওসিএইচএ) উপপ্রধান রমেশ রাজাসিংঘাম জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, ‘আমরা এমন এক পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আছি, ফেব্রুয়ারির শেষে এসে গাজায় অন্তত ৫ লাখ ৭৬ হাজার মানুষ দুর্ভিক্ষ থেকে এক ধাপ দূরে এসে পৌঁছেছে। গাজার মোট জনসংখ্যার এক–চতুর্থাংশ এটা।’
গাজাবাসীর খাদ্যনিরাপত্তা নিয়ে এক বৈঠকে জাতিসংঘের কর্মকর্তা রমেশ বলেন, গাজার উত্তরাঞ্চলে দুই বছরের কম বয়সী প্রতি ছয় শিশুর একজন তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে। সেই সঙ্গে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ২৩ লাখ মানুষের প্রায় সবাইকে বেঁচে থাকার জন্য দুঃখজনকভাবে ‘অপর্যাপ্ত’ খাদ্যসহায়তার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।
রমেশ রাজাসিংঘাম আরও বলেন, যদি কিছু করা না হয়, তাহলে গাজায় অনিবার্যভাবে ব্যাপক পরিসরে দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়তে পারে। সেই সঙ্গে সংঘাতে আরও অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।