ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটে কোনো প্রার্থী প্রয়োজনীয় ভোট নিশ্চিত করতে না পারায় আজ শুক্রবার দ্বিতীয় দফায় ভোট গ্রহণ চলছে। স্থানীয় সময় সকাল আটটা থেকে (বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১০টা থেকে) ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। এ দফায় সংস্কারপন্থী প্রার্থী মাসুদ পেজেশকিয়ান এবং কট্টরপন্থী সাইদ জালিলির মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে।
গত মে মাসে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি নিহত হওয়ায় দেশটিতে আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে গত ২৮ জুন প্রথম দফার নির্বাচনে কোনো প্রার্থীই ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পাওয়ায় আজ দ্বিতীয় দফার ভোট হচ্ছে। প্রথম দফার ভোটে প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা দুই প্রার্থীর মধ্যে আজ লড়াই হচ্ছে। প্রথম দফায় ৪২ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে ছিলেন সংস্কারপন্থী প্রার্থী পেজেশকিয়ান। আর ৩৯ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন সাইদ জালিলি।
ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমদ বাহিদির বরাতে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়, ১৪তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় আজ ৫৮ হাজার ৬৩৮টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ চলছে।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত ফুটেজে দেখা গেছে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি সকাল আটটায় ভোট গ্রহণ শুরুর পরপরই ভোট দিয়েছেন।
প্রথম দফার নির্বাচনে ইরানের ৬ কোটি ১০ লাখ ভোটারের মধ্যে মাত্র ৪০ শতাংশ ভোট দিয়েছিলেন। ১৯৭৯ সাল থেকে ইরানে যত প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়েছে, তার মধ্যে এটিই সবচেয়ে কম ভোটার উপস্থিতির ঘটনা।
নিয়ম অনুযায়ী, ইরানে আগামী বছরের জুনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট হওয়ার কথা ছিল অর্থাৎ ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের চার বছরের মেয়াদ শেষে ভোট অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু গত ১৯ মে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হলে প্রেসিডেন্ট পদটি শূন্য হয়ে পড়ে। ফলে আগাম নির্বাচনের বিকল্প ছিল না। সংবিধান অনুযায়ী, ৫০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
প্রথম দফার নির্বাচনে পেজেশকিয়ান ও জালিলি ছাড়া আরও দুজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তাঁরা হলেন কট্টরপন্থী পার্লামেন্ট স্পিকার মোহাম্মদ বাঘের গালিবাফ এবং কট্টরপন্থী মোস্তফা পুরমোহাম্মদি। গালিবাফ ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছিলেন। আর পুরমোহাম্মদি পেয়েছিলেন ১ শতাংশের কম ভোট।
দ্বিতীয় দফায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী মাসুদ পেজেশকিয়ানের বয়স ৬৯ বছর। তিনি হৃদ্রোগবিষয়ক সার্জন। ইরানের পার্লামেন্টে ২০০৮ সাল থেকে উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলীয় তাবরিজ শহরের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন তিনি। ইরানের প্রধান সংস্কারপন্থী জোট তাঁকে সমর্থন দিয়েছে। সাবেক দুই সংস্কারপন্থী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ খাতামি ও হাসান রুহানিরও সমর্থন পেয়েছেন তিনি।
অপর দিকে ৫৮ বছর বয়সী জালিলি কট্টরপন্থী সমর্থকদের যথেষ্ট সমর্থন ধরে রেখেছেন।