গাজায় কার্যকর থাকা সাত দিনের যুদ্ধবিরতির মধ্যে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ২৪০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যুদ্ধবিরতির সপ্তম দিনে মুক্তি পান ৩০ জন। ওই দিন রাতেই রেডক্রসের একটি বাসে করে তাঁরা পশ্চিম তীরের রামাল্লায় পৌঁছান।
ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া এই ফিলিস্তিনিদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছে রয়টার্স। তাঁদের একজন আলী আসকারা। তিনি বলেন, ইসরায়েলের কারাগারে বন্দীদের ওপর শারীরিক ও মানসিকভাবে সব ধরনের নির্যাতন চালানো হয়েছে।
আসকারা আরও বলেছেন, ইসরায়েলি কারাগারে তাঁদের মারধর করা হতো। নির্যাতনের কারণে কারও কারও চোখে রক্তক্ষরণ পর্যন্ত হয়েছিল।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইউনিস হাওয়ামদেহ নামের এক ফিলিস্তিনি বলেন, ইসরায়েলের বন্দী থাকার অভিজ্ঞতা ‘স্বাভাবিক’ ছিল না। তিনি একে ‘ট্র্যাজেডি’ বলে উল্লেখ করেছেন। তবে হাওয়ামদেহ এ ব্যাপারে বিস্তারিত উল্লেখ করেননি। তিনি কোন কারাগারে বন্দী ছিলেন, তার নামও উল্লেখ করা হয়নি।
সদ্য মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনি আবদুল্লাহ আল বাওয়ের আশা, শিগগির অন্য বন্দীদেরও মুক্তি দেওয়া হবে।
ইসরায়েল বলেছে, আইনগতভাবে সব বন্দীকে আটক রাখা হয়েছিল।
যদিও এ পর্যন্ত যাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে, তাঁদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করেনি ইসরায়েলি কারা কর্তৃপক্ষ।
গাজায় ইসরায়েলের টানা ৫১ দিনের হামলার পর গত ২৪ নভেম্বর চার দিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার এ যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র। এরপর দুই দফায় বাড়ানো হয় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ। সাত দিনের যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পরপরই গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে গাজায় আবারও ইসরায়েলের হামলা শুরু হয়।
বৃহস্পতিবার তোলা কিছু ছবিতে দেখা গেছে, মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে তাঁদের বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের পুনর্মিলনের পর আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
একটি ছবিতে দেখা গেছে, ছেলে ফিরে আসার পর তাঁকে জড়িয়ে মা কাঁদছেন। মা-ছেলের এই মিলনকে হাততালি দিয়ে উদ্যাপন করছেন তাঁদের ঘিরে থাকা লোকজন।
সাত দিনের যুদ্ধবিরতিতে ইসরায়েলি কারাগার থেকে মোট ২৪০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার যুদ্ধবিরতির সপ্তম দিনে মুক্তি পাওয়া ৩০ কারাবন্দীরা বাসে করে রামাল্লায় পৌঁছান। আরেকটি ছবিতে দেখা গেছে, বাসের ছাদে উঠে পড়া কয়েকজন হামাসের পতাকা ওড়াচ্ছেন।