রাফার একটি সরকারি স্কুলে খাবার সংগ্রহের জন্য এসেছেন বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
রাফার একটি সরকারি স্কুলে খাবার সংগ্রহের জন্য এসেছেন বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

খাবার না পেয়ে গাজায় দুই মাসের শিশুর মৃত্যু

গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে অনাহারে ভুগে দুই মাস বয়সী এক ফিলিস্তিনি শিশু মারা গেছে। অবরুদ্ধ উপত্যকায় চলমান যুদ্ধের মধ্যে বিপুল শিশুর মৃত্যু হতে পারে বলে জাতিসংঘের সতর্কবার্তার কয়েক দিনের মাথায় সংবাদমাধ্যমগুলো এমন খবর দিয়েছে।

হামাস-সংশ্লিষ্ট ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা শিহাবের প্রতিবেদনে বলা হয়, মাহমুদ ফাত্তু নামের ওই শিশু শুক্রবার গাজা নগরীর আল-শিফা হাসপাতালে মারা গেছে।

ভিডিওতে এক চিকিৎসাকর্মী বলেন, ‘আমরা দেখলাম, এক নারী তাঁর শিশুসন্তানকে কোলে নিয়ে সাহায্যের জন্য চিৎকার করছিলেন। তাঁর কোলে থাকা বিবর্ণ শিশুটিকে দেখে মনে হচ্ছিল, মুমূর্ষু। আমরা দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলাম। সেখানে জানা গেল, সে প্রচণ্ড রকমের অপুষ্টিতে ভুগছে। চিকিৎসাকর্মীরা তাকে দ্রুত হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করেন। গাজায় দুধের সরবরাহ একেবারেই না থাকায় শিশুটি কয়েক দিন ধরে দুধ খেতে পারেনি।’

ওই চিকিৎসাকর্মী বলেন, প্রচণ্ড অপুষ্টির কারণে মাহমুদ ফাত্তু মারা গেছে।
ইসরায়েল যখন অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আরও বেশি করে সহায়তা পৌঁছাতে দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করে যাচ্ছে, তখনই এমন ঘটনা ঘটল।
জাতিসংঘের হিসাব অনুসারে, গাজার প্রায় ২৩ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে।

যুদ্ধের শুরু থেকেই গাজায় খাদ্য, পানি ও জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। তবে ডিসেম্বরে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে আলোচনার পর মানবিক সহায়তার জন্য একটি প্রবেশপথ খুলে দেওয়া হয়। তবে ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, কারেম আবু সালেম নামের ওই ক্রসিংয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর কঠোর তল্লাশি এবং কট্টর ডানপন্থীদের বিক্ষোভের কারণে সেখান দিয়ে খাবারের ট্রাক ঠিকমতো ঢুকতে পারছে না।

গাজার উত্তরাঞ্চলের অবস্থা বেশি শোচনীয়। গত অক্টোবর থেকে সেখানে একেবারেই সহায়তা পৌঁছেনি। চিকিৎসকেরা বলেছেন, ওই অঞ্চলে শিশুদের অপুষ্টির হার ক্রমে বাড়ছে।

গাজার উত্তরাঞ্চলে কামাল আদওয়ান হাসপাতালের প্রধান হুসাম আবু সাফিয়া সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘চরম বিপর্যয়’ বলে উল্লেখ করেছেন।