এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়। এর পরই থেকে পশ্চিমা বিশ্ব বলে আসছে, রাশিয়াকে অস্ত্রসহ নানাভাবে সহযোগিতা করছে ইরান। যুক্তরাষ্ট্রও বলেছে, রাশিয়া ও ইরানের মধ্যকার সম্পর্ক উষ্ণ হতে হতে দুই দেশের মধ্যে পূর্ণাঙ্গমাত্রার প্রতিরক্ষা সহযোগিতা গড়ে উঠেছে। শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, ইরান এখন রাশিয়ার শীর্ষ সামরিক সহযোগী। খবর বিবিসির।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, রাশিয়া নজিরবিহীনমাত্রায় সামরিক সহায়তা দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে থাকা কিছু প্রতিবেদনের বরাতে তিনি আরও বলেন, দুই দেশ যৌথভাবে প্রাণঘাতী ড্রোন উৎপাদনের কথা বিবেচনা করছে।
রাশিয়া ও ইরানের মধ্যকার পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়টিকে সম্প্রতি সামনে নিয়ে আসা হয়েছে। ইউক্রেন অভিযোগ করেছে রাশিয়া ইরানি ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালাচ্ছে।
রাশিয়ায় ড্রোন পাঠানোর কথা প্রাথমিকভাবে অস্বীকার করেছিল ইরান। পরে দেশটি স্বীকার করেছে ইউক্রেনে রুশ অভিযান শুরুর আগে তারা মস্কোকে কিছু অস্ত্র দিয়েছিল।
কিরবি বলেছেন, ড্রোন উৎপাদনের জন্য ইরান ও রাশিয়ার মধ্যে যে অংশীদারত্ব গড়ে উঠেছে, তা ইউক্রেন, ইরানের প্রতিবেশী দেশগুলো এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য ক্ষতিকর হবে।
তিনি বলেন, ‘ইরান রাশিয়ার শীর্ষ সামরিক সমর্থকে পরিণত হয়েছে। জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা করতে রাশিয়া ইরানি ড্রোন ব্যবহার করছে। এতে লাখো ইউক্রেনীয় বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছেন, তাঁরা ঘর উষ্ণ রাখতে পারছেন না এবং জরুরি সেবা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রকৃতপক্ষে ইরানের কর্মকাণ্ডের কারণে ইউক্রেনের জনগণ মারা যাচ্ছে।’
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি বলেন, রাশিয়ার প্রধান সামরিক সহযোগী দেশগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে ইরান। তাদের মধ্যকার সম্পর্ক আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাকে হুমকির মধ্যে ফেলেছে। দুই দেশের মধ্যকার ‘জঘন্য চুক্তি’র কারণে রাশিয়ায় শত শত ড্রোন পাঠিয়েছে ইরান। বিনিময়ে রুশ সরকার ইরানের সরকারকে সামরিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে। এতে মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের সহযোগী দেশগুলো এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য ইরান যে ঝুঁকি তৈরি করেছে, তা আরও বাড়বে।
ইউক্রেন অভিযোগ করেছে ইরান রাশিয়াকে কামিকাজে ড্রোন সরবরাহ করছে। ইউক্রেনে বেশ কয়েকটি হামলায় এ ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে। ১৭ অক্টোবর কামিকাজে ড্রোন ব্যবহার করে চালানো এক হামলায় আটজন নিহত হওয়ার কথা বলেছে ইউক্রেন।
ইরান প্রাথমিকভাবে এ তথ্য অস্বীকার করেছে। তবে পরবর্তী সময় তিনি স্বীকার করেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার বেশ কয়েক মাস আগে রাশিয়ায় সীমিতসংখ্যক ড্রোন পাঠানো হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি একে মিথ্যা কথা বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁর দাবি, ইউক্রেন দিনে প্রায় ১০টি করে ইরানি ড্রোন ভূপাতিত করছে।