সিরিয়ায় নতুন করে ছড়িয়ে পড়া সংঘর্ষে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। গত বুধবার থেকে সিরিয়ার বিদ্রোহী বাহিনী দেশটির সেনাবাহিনীর ওপর তুমুল আক্রমণ শুরু করে।
বিদ্রোহীরা এরই মধ্যে সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহৎ নগরী আলেপ্পোর বেশির ভাগ অংশের দখল নিয়েছে। আলেপ্পো সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সেনাবাহিনীর দখলে ছিল।
সিরিয়ায় যুদ্ধ যেভাবে ছড়িয়ে পড়েছে তাতে শঙ্কিত বোধ করছেন বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, বেসামরিক মানুষ ও বেসামরিক অবকাঠামোর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সব পক্ষকে অবশ্যই যথাসাধ্য করতে হবে। যার মধ্যে বেসামরিক নাগরিকদের প্রাণ বাঁচাতে নিরাপদে পালিয়ে যেতে দেওয়ার সুযোগ দেওয়ার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত। তিনি আরও বলেন, প্রায় ১৪ বছর ধরে সিরিয়ার মানুষ সংঘাত সহ্য করে যাচ্ছেন। আর রক্তপাত নয়, এখন এর একটি রাজনৈতিক সমাধান তাঁদের প্রাপ্য। যে সমাধান তাঁদের শান্তিপূর্ণ একটি ভবিষ্যৎ দিতে পারবে।
২০১১ সাল থেকে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলছে। বিভিন্ন দেশ এই যুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে পড়েছিল। মাঝে কয়েক বছর যুদ্ধ বন্ধ ছিল, তবে আনুষ্ঠানিক কোনো যুদ্ধবিরতি হয়নি।
বুধবার থেকে সেখানে নতুন করে সংঘাত শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ৪৫৭ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস। নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই যোদ্ধা হলেও অন্তত ৭২ বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন।
গতকাল সোমবার এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের কো–অর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ওসিএইচএ) বলেছে, ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ইদলিব ও আলেপ্পোর উত্তরাঞ্চল থেকে সাড়ে ৪৮ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের অর্ধেকের বেশি শিশু। এখনো বহু মানুষ (প্রাণ বাঁচাতে) বাড়িঘর ছাড়ছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে ওসিএইচএর প্রধান টম ফ্লেচার পরিস্থিতিকে ‘উদ্বেগজনক’ বলেছেন। তিনি বলেন, হাজার হাজার মানুষ পালিয়ে যাচ্ছেন, জরুরি সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। নারী, পুরুষ ও শিশুরা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছেন।
নিরাপত্তার শঙ্কায় সিরিয়ার আলেপ্পো, ইদলিব ও হামায় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের অনেকাংশই স্থগিত করা হয়েছে বলে জানান গুতেরেসের মুখপাত্র।