গাজার উত্তরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে গত আড়াই মাসে মাত্র ১২ ট্রাক খাবার আর পানি বিতরণ করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক দাতব্য প্রতিষ্ঠান অক্সফাম। এর মধ্য দিয়ে অবরুদ্ধ এলাকাগুলোয় মানবিক পরিস্থিতির ক্রমবর্ধমান অবনতির বিষয়ে সতর্কতা করে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
গত শনিবার পর্যন্ত হালনাগাদ তথ্য উল্লেখ করে এক বিবৃতিতে অক্সফাম জানায়, মানবিক সহায়তার খাবার ও পানি নিয়ে গাজার উত্তরাঞ্চলে প্রবেশের জন্য গত আড়াই মাসে ৩৪টি ট্রাককে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর ব্যবস্থাপনাগত বিলম্ব ও বাধার কারণে বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের মধ্যে মাত্র ১২ ট্রাক খাবার ও পানি বিতরণ করা সম্ভব হয়েছে।
যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই হামাস নিয়ন্ত্রিত অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক সহায়তার ট্রাক প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করে রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের দাবি, মানবিক সহায়তা বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বিপুল পরিমাণে সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা ও বিতরণে সক্ষম নয়।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলা চালায় হামাস। ইসরায়েলি সরকারি তথ্যের বরাতে এএফপির খবর, নিহত হন ১ হাজার ২০৮ জন, যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক মানুষ। ওই দিনই গাজায় পাল্টা হামলা চালায় ইসরায়েল। হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় ৪৫ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
গত মাসে গাজাবাসীকে মানবিক সহায়তা দিতে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়ার নজির তুলে ধরেছে অক্সফাম। বলা হয়েছে, ১১টি ট্রাকের একটি বহরকে জাবালিয়ায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হোল্ডিং পয়েন্টে আটকে দেওয়া হয়। পরবর্তীকালে সেসব ট্রাকে থাকা কিছু খাবার স্থানীয় ক্ষুধার্ত মানুষেরা লুট করে নেন।
এরপর গন্তব্যের উদ্দেশে ট্রাকগুলোকে যাত্রার সবুজ সংকেত দেওয়া হয়। কিন্তু সামরিক চেকপোস্টে আবারও ত্রাণের ট্রাক আটকে দেওয়া হয়। একটি সামরিক অঞ্চলে মানবিক সহায়তার পণ্য খালাসে ট্রাকচালকদের বাধ্য করেন ইসরায়েলি সেনারা। ওই অঞ্চলে ত্রাণের জন্য মরিয়া বেসামরিক মানুষের প্রবেশাধিকার ছিল না বলে জানায় অক্সফাম।