ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস গাজায় জিম্মি থাকা ইসরায়েলি নাগরিকদের মুক্তির ব্যাপারে আলোচনা শুরু করতে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া প্রস্তাবে রাজি হয়েছে। গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করার লক্ষ্যে প্রথম ধাপে হওয়া সমঝোতার ১৬ দিন পর এমন সম্মতি জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ শনিবার হামাসের এক জ্যেষ্ঠ সূত্র রয়টার্সকে এ কথা জানিয়েছে।
এ ক্ষেত্রে হামাস একটি শর্ত বেঁধে দিয়েছে। আর তা হলো, সমঝোতা চুক্তিটিতে স্বাক্ষর করার আগে ইসরায়েলকে প্রথমে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির অঙ্গীকার করতে হবে। পাশাপাশি প্রথম ধাপে ছয় সপ্তাহের সমঝোতা চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আলোচনার সুযোগ দিতে হবে। আলোচনাটি গোপনীয় হওয়ার কারণে ওই সূত্র তাঁর নাম প্রকাশে অনিচ্ছা জানিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় চলমান শান্তি প্রচেষ্টার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বলেছেন, প্রস্তাবটি যদি ইসরায়েল মেনে নেয়, তবে এর মধ্য দিয়ে চুক্তির রূপরেখা তৈরি করা যেতে পারে। আর এতে গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার ৯ মাসের যুদ্ধের অবসান হতে পারে।
ইসরায়েলের আলোচক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এখন সমঝোতায় পৌঁছানোর মতো সত্যিকারের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
এর মধ্য দিয়ে ইসরায়েলের আগের অবস্থান বদলের ইঙ্গিত মিলেছে। এর আগে, হামাসের দাবিকে অগ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করেছিল হামাস।
শনিবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর এক মুখপাত্রের মন্তব্য জানার চেষ্টা করেছিল রয়টার্স। তবে তাৎক্ষণিক সাড়া পাওয়া যায়নি। গতকাল শুক্রবার নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে বলা হয়, আগামী সপ্তাহে আলোচনা চলবে এবং দুই পক্ষের মধ্যে এখনো যে মতবিরোধ রয়েছে, তার ওপর আলোচনা করা হবে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। ইসরায়েলের দাবি, এ হামলায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়েছে। জবাবে সেদিন থেকে গাজায় হামলা শুরু করে হামাস।
গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের হিসাব অনুসারে, উপত্যকাজুড়ে ৭ অক্টোবর থেকে চলমান ইসরায়েলি হামলায় ৩৮ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে।
হামাস সূত্র বলছে, দ্বিতীয় দফার চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যত দিন পরোক্ষভাবে আলোচনা চলবে, তত দিন মধ্যস্থতাকারীরা একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতি, ত্রাণ সরবরাহ অব্যাহত রাখা এবং ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহারের নিশ্চয়তা দেবেন বলে প্রস্তাবে আশ্বস্ত করা হয়েছে।
গত কয়েক দিনে গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির প্রচেষ্টা জোরদার হতে দেখা গেছে।
আঞ্চলিক একটি সূত্র বলেছে, নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে একটি চুক্তি নিশ্চিত করার জন্য মার্কিন প্রশাসন জোর চেষ্টা চালাচ্ছে।
গতকাল নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান কাতারে মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে প্রাথমিক বৈঠক শেষে দেশে ফিরেছেন। আগামী সপ্তাহেও আলোচনা চলবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।