ইরানের ‘নৈতিকতা পুলিশের’ ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

পুলিশি হেফাজতে মাশা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় ইরানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে
ছবি: রয়টার্স

ইরানের ‘নৈতিকতা পুলিশের’ ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের নারী ও বিক্ষোভকারীদের ওপর নির্যাতন-সহিংসতার অভিযোগে জো বাইডেনের প্রশাসন এই নিষেধাজ্ঞা দিল। খবর আল-জাজিরার।

ইরানের ‘নৈতিকতা পুলিশের’ ওপর এমন একসময় যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিল, যখন এই সংস্থার হেফাজতে ২২ বছর বয়সী এক তরুণীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরানজুড়ে বিক্ষোভ চলছে। দেশটির অন্তত ৫০টি শহরে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩১ জন নিহত হয়েছেন।

‘অনুপযুক্ত পোশাক’ পরায় কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনি নামের ওই তরুণীকে গত সপ্তাহে ইরানের রাজধানী তেহরানে গ্রেপ্তার করেছিল দেশটির ‘নৈতিকতা পুলিশ’। পরে পুলিশি হেফাজতে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ইরানজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় ওঠে।

গতকাল বৃহস্পতিবার ইরানের ‘নৈতিকতা পুলিশের’ ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ দপ্তর। একই সঙ্গে ইরানের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

মার্কিন অর্থ দপ্তর বলছে, ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীগুলো শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দমনে নিয়মিত সহিংসতার আশ্রয় নিয়ে থাকে। তারা ইরানের সুশীল সমাজের সদস্য, রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী, নারী অধিকারকর্মী ও দেশটির বাহাই সম্প্রদায়ের লোকজনের ওপর সহিংস দমনপীড়ন চালিয়ে আসছে।

এক বিবৃতিতে মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন বলেন, ‘মাহসা আমিনি একজন সাহসী নারী ছিলেন। নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে তাঁর মৃত্যু নিজ দেশের জনগণের বিরুদ্ধে ইরান সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর আরেকটি বর্বরতার কাজ।’

জ্যানেট ইয়েলেন বলেন, ‘আমরা এই অবিবেচনাপ্রসূত আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই। নারীদের প্রতি সহিংসতা এবং মতপ্রকাশ ও সভা-সমাবেশের ওপর চলমান সহিংস দমনপীড়ন বন্ধে ইরান সরকারের প্রতি আমরা আহ্বান জানাই।’

হেফাজতে মাহসা আমিনিকে মারধরের অভিযোগ চলতি সপ্তাহের শুরুতে অস্বীকার করেন ইরানের এক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা।

তেহরানের পুলিশপ্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হোসেইন রাহিমি গত সোমবার বলেন, আঁটসাঁট পায়জামা পরা ও হিজাব ঠিকমতো না পরার কারণে মাহসাকে আটক করা হয়েছিল। তবে তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করার অভিযোগ একেবারেই মিথ্যা।

আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় প্রথমে ইরানের জাতিগত কুর্দি-অধ্যুষিত উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে।

ইরানের কয়েকটি শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইন্টারনেট–সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।