ইয়েল নোয়, একজন ইসরায়েলি নারী। বাড়ি দেশটির উত্তরাঞ্চলে। ‘রোড টু রিকভারি’ নামের একটি দাতব্য সংস্থা চালান তিনি। সংস্থাটির স্বেচ্ছাসেবীরা অনেক আগে থেকেই ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর ও গাজার মুমূর্ষু রোগীদের (বিশেষত শিশু) খুঁজে বের করে ইসরায়েলের ভেতরে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে কাজ করছেন।
ইয়েল নোয়ের জন্য স্বাভাবিক এ পরিস্থিতি বদলে যায় গত ৭ অক্টোবর। ওই দিন ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এতে প্রাণ যায় ১ হাজার ২০০ জনের। সেদিনই শুরু হয় গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা। থমকে যায় ইয়েলের কাজও।
কিন্তু দ্রুতই ঘুরে দাঁড়ান ইয়েল নোয়। ব্যাপক রক্তপাতের মধ্যেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কয়েকজনকে সঙ্গী করে নিজের কাজটি চালিয়ে যাচ্ছেন ইসরায়েলি এই নারী।
৭ অক্টোবর হামাস সদস্যদের হামলায় ইয়েলের মা–বাবা আক্রান্ত হন। প্রাণ যায় রোড টু রিকভারির অন্তত চার স্বেচ্ছাসেবকের। আরও চার স্বেচ্ছাসেবক তাঁদের পরিবারের সদস্যদের হারান। ওই দিন হামাসের হামলায় স্তব্ধ হয়ে যান ইয়েল। তিনি কখনোই হামাসের কার্যক্রম সমর্থন করতে পারেননি। এ কারণে ৭ অক্টোবরের পর কিছুদিন কাজ গুটিয়েও নিয়েছিলেন। কিন্তু গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংসতা বেড়ে যাওয়ার পর আর চুপ করে থাকতে পারেননি।
সংবাদমাধ্যমকে ইয়েল বলেন, ‘আমাদের মতো গাজাবাসীও এ সংঘাতের ভুক্তভোগী। তাই আমি আগের মতো ফিলিস্তিনিদের সহায়তা করতে শুরু করেছি। কেননা এখনকার পরিস্থিতির জন্য তাঁদের (ফিলিস্তিনিদের) কোনো দায় নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ক্যানসার আক্রান্ত শিশুদের সহায়তা দিতে আমরা না বলতে পারি না। তাঁরা আমাদের প্রতিবেশী। তাঁদের সহায়তা দরকার। আর আমাদেরও তাঁদের সহায়তা করা প্রয়োজন।’
চলমান সংঘাতের মধ্যেও রোড টু রিকভারির স্বেচ্ছাসেবীদের সঙ্গে নিয়ে গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের তল্লাশিচৌকিগুলোয় মুমূর্ষু রোগীদের খুঁজে বের করছেন ইয়েল। এরপর তাঁদের ইসরায়েলের ভেতর হাসপাতালে নেওয়া, চিকিৎসার ব্যবস্থা করার ভার কাঁধে তুলে নিচ্ছেন।
ইয়েল বলেন, ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটা খুবই কঠিন কাজ। তবে আমরা থামব না। সেবা দেওয়ার কাজ চালিয়ে যাব।’