জেরুজালেমে জাতীয় গ্রন্থাগারে ৭ অক্টোবরের হামলায় নিহত ইসরায়েলিদের ছবির প্রদর্শনী
জেরুজালেমে জাতীয় গ্রন্থাগারে ৭ অক্টোবরের হামলায় নিহত ইসরায়েলিদের ছবির প্রদর্শনী

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে হামাসের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করলেন ইসরায়েলিরা

হামাসের হামলায় নিহত ইসরায়েলি নারীদের কারও কারও ‘যৌনাঙ্গ ইচ্ছাকৃতভাবে কর্তন’ করা হয়েছিল। কিছু ক্ষেত্রে যৌন নিপীড়ন চালানোর বিষয়টি ‘প্রশ্নাতীতভাবে’ প্রতীয়মান হয়েছে।

হামাসের হামলায় নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ নিয়ে কাজ করা ইসরায়েলিরা গতকাল বুধবার ব্রিটিশ সংসদ সদস্যদের কাছে এসব অভিযোগ করেন। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এ শুনানির আয়োজন করা হয়।

তবে ইসরায়েলি নারীদের ওপর যৌন নিপীড়ন চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে রকেট হামলা চালায় হামাস। পাশাপাশি সংগঠনটির কয়েক শ সদস্য সীমান্ত পেরিয়ে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে ঢুকে হামলা চালান। ইসরায়েল জানিয়েছে, ওই দিনের হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়। জবাবে সেদিন থেকেই গাজা উপত্যকায় হামলা শুরু করে ইসরায়েলের বাহিনী। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, চলমান এ হামলায় এখন পর্যন্ত ২৬ হাজার ৯০০-এর বেশি ফিলিস্তিন নিহত হয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।

গতকাল ব্রিটিশ পার্লামেন্টের বৈঠকে ইসরায়েলিরা যখন সাক্ষ্য দিচ্ছিলেন, তখন অনেক সংসদ সদস্য ও হাউস অব লর্ডস সদস্যের চোখ ভিজে যায়।

৭ অক্টোবরের ঘটনার পর শুরা সেনাঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া কয়েক নারীর মরদেহ শনাক্তের জন্য স্থপতি শারি মেন্দেসকে ডেকেছিল ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তাঁকে ডাকা হয়েছিল রিজার্ভ সেনা হিসেবে। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে দেওয়া বক্তব্যে তিনি দাবি করেন, ওই নারীদের অনেকের পরনে রক্তাক্ত ও কাটাছেঁড়া অন্তর্বাস ছিল। অনেকের পরনে কোনো কাপড় ছিল না।

শারি মেন্দেস বলেন, ‘আমাদের দলের কমান্ডার এমন কয়েকজন নারী সেনাকে দেখেছেন, যাঁদের যৌনাঙ্গ, ঊরুসন্ধি কিংবা স্তনে গুলি করা হয়েছিল। এটা অবাঞ্ছিত ঘটনা। ইচ্ছাকৃত ও পদ্ধতিগতভাবে যৌনাঙ্গ কাটা হয়েছে।’

ইসরায়েলের জ্যেষ্ঠ এক পুলিশ কর্মকর্তার দাবি, ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের ঘটনা যে ঘটেছে, তার ‘স্পষ্ট প্রমাণ’ তাঁর বাহিনীর হাতে আছে। এসব ঘটনা এত বড় মাত্রায় হয়েছে যে একে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে গণ্য করা যায়।

যুক্তরাজ্যের নারীবিষয়ক মন্ত্রী কেমি বাদেনচ বলেন, ‘সব কটি প্রতিবেদনকে অবশ্যই পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আওতায় আনতে হবে। যৌন নিপীড়নের ঘটনা নিয়ে অবশ্যই নিন্দা জানাতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ধর্ষণের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না।

ইসরায়েলের ধর্মীয় সংস্থা জাকা মরদেহ সমাহিত করে থাকে। সংস্থাটিতে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করছেন সিমচা গ্রিনিমান। হামাসের হামলার পর তিনি অনেক মরদেহ উদ্ধার করেছেন। এর মধ্যে একটি শোবার ঘরের খাট থেকে এক নারীর মরদেহ উদ্ধারের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বিবিসিকে সিমচা বলেন, ‘তাঁর শরীরের কোমর থেকে নিচ পর্যন্ত কোনো কাপড় ছিল না। মাথার পেছন দিক থেকে তাঁকে গুলি করা হয়েছিল। তাঁর হাতে একটি তাজা গ্রেনেড ছিল।’

ব্রিটিশ নারীবিষয়ক মন্ত্রী কেমি বাদেনচ বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি যুক্তরাজ্য সংহতি জানায়। ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে হওয়া যৌন নিপীড়নের ঘটনা নিয়ে নিন্দা জানাতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।