ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির নতুন প্রস্তাব দিয়েছে মিসর। গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ও বন্দীবিনিময়ে মধ্যস্থতা করে আসছে মিসর ও কাতার।
আজ সোমবার আল–জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন প্রস্তাবে ৭ থেকে ১০ দিনের যুদ্ধবিরতি এবং ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তির বিনিময়ে গাজার সশস্ত্র সংগঠনগুলোর হাতে থাকা সব বেসামরিক জিম্মিকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
নতুন যুদ্ধবিরতির ক্ষেত্রে আরও কিছু প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে এসব প্রস্তাবে ইসরায়েলের রাজি হওয়ার সম্ভাবনা কম বলেই মনে করা হচ্ছে। অতিরিক্ত এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি এবং ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তির বিনিময়ে জিম্মি সব নারী সেনার মুক্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
এরপর এক মাসের আলোচনার ভিত্তিতে আরও ফিলিস্তিনি বন্দীর মুক্তি এবং ইসরায়েলি বাহিনীকে গাজা থেকে প্রত্যাহারের শর্তে জিম্মি সব ইসরায়েলি সেনাকে ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
গতকাল ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভায় এ বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। তবে এ নিয়ে ইসরায়েলকে অনেক রাজনৈতিক বিষয়ে বিবেচনায় নিতে হবে। বিশেষ করে মন্ত্রিসভা ঐক্যবদ্ধ নয়। যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে মন্ত্রিসভায় পক্ষ-বিপক্ষ রয়েছে। এ ছাড়া স্থল অভিযান বিস্তৃত করার চেয়ে বিমান হামলা বাড়ানোর পক্ষেও মত রয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না জাতিসংঘের ত্রাণসহায়তা সংস্থার কর্মীরাও। রুশ বার্তা সংস্থা তাসের খবরে বলা হয়েছে, অবরুদ্ধ এ উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের ত্রাণসহায়তাবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর ১৪২ কর্মী নিহত হয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) ইউএনআরডব্লিউএ বলেছে, ‘অভাবী লোকজনকে সাহায্য করতে আমাদের টিম অসম্ভব কাজটিই করে যাচ্ছে। গাজায় ইউএনআরডব্লিউএর আরও সহকর্মী নিহতের ঘটনায় আমরা শোক জানাচ্ছি। এই সংখ্যা এখন ১৪২-এ দাঁড়িয়েছে। অধিকাংশই তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিহত হয়েছেন।’
ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছেন সাংবাদিকেরাও। গাজার হামাস সরকারের গণমাধ্যম কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় ১০৩ সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে আল-জাজিরা আরবির ক্যামেরাম্যান সামের আবুদাকাও রয়েছেন।
সাংবাদিকদের বৈশ্বিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিস্টের উপমহাসচিব টিম ডসন বলেন, ‘আর কোনো সংঘাতে এত বেশিসংখ্যক সাংবাদিকদের মৃত্যু আমরা দেখিনি।’