ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় ইস্পাহান প্রদেশে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার ভোররাতে ইস্পাহানের আকাশে দেখা গেছে আলোর ঝলকানি। সক্রিয় করা হয়েছে ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। ইরানের একজন সেনা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইস্পাহান শহরের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা থেকে কয়েকটি সন্দেহজনক বস্তু লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণের পর শহরের পূর্ব দিকে বিস্ফোরণ ঘটেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলছেন, ইসরায়েলের একটি ক্ষেপণাস্ত্র ইরানে আঘাত হেনেছে। অপরদিকে ইরানের কর্মকর্তারা বলছেন, দেশের বাইরে থেকে নয়; ইরানের ভেতর থেকে অনুপ্রেবশকারীরা এ হামলা চালিয়েছে।
ইরানে হামলার ক্ষেত্রে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ইস্পাহানকে কেন বেছে নেওয়া হয়, সে বিষয়ে একজন পারমাণবিক ও রাসায়নিক অস্ত্রবিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলেছে বিবিসি। তাঁর মতে, এই শহর হামলার সম্ভাব্য নিশানা হওয়াটা খুবই উল্লেখযোগ্য বিষয়।
যুক্তরাজ্য ও ন্যাটোর পারমাণবিক অস্ত্রবিষয়ক বাহিনীর সাবেক কমান্ডার হামিশ ডে ব্রেটন গর্ডন বলেছেন, ইরানের এই শহর ঘিরে অনেকগুলো সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। তার একটি লক্ষ্য করেই ভোররাতে হামলা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
হামিশ ডে ব্রেটন গর্ডন বিবিসিকে বলেন, ইরান যেখানে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে বলে ইসরায়েলসহ পশ্চিমা দেশগুলোর দাবি, সেই পারমাণবিক স্থাপনার আশপাশে হামলার ঘটনাটি ঘটেছে। এর মধ্য দিয়ে মূলত ইরানে হামলা করার সক্ষমতার বিষয়ে জানান দিতে চেয়েছে ইসরায়েল। ইরানের ছোড়া তিন শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্রায় সব কটিই ইসরায়েল ভূপাতিত করেছিল। কিন্তু ইসরায়েলের ছোড়া কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্রের সব কটি সফলভাবে আঘাত করেছে।
ব্রেটন গর্ডনের মতে, প্রথাগত সামরিক সক্ষমতার বিচারে ইরানের চেয়ে এগিয়ে আছে ইসরায়েল। সে কারণেই ইরান ইসরায়েলের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধ এড়িয়ে লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও ইয়েমেনের হুতিদের মতো গোষ্ঠীগুলোর মাধ্যমে ছায়াযুদ্ধ চালাতে বেশি আগ্রহী। ইরানের পক্ষ থেকে হামলার এ ঘটনাকে ছোট হিসেবে দেখানোর কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ইরানের পুরোনো আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা যে ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র ভেদ করেছে, এটা তেহরান স্বীকার করতে চাইছে না।