গত মাসে ইসরায়েলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হওয়ার পর লেবাননে গিয়েছিলেন ইরানের কুদস ফোর্সের কমান্ডার ইসমাইল কানি। গত সপ্তাহের শেষ দিকে লেবাননের বৈরুতে ইসরায়েলের হামলার পর থেকে ইসমাইল কানির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ইরানের দুজন জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
ইরানের এক কর্মকর্তা বলেছেন, লেবাননের শিয়াপন্থী রাজনৈতিক দল ও সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হাশেম সাফিউদ্দিনকে নিশানা করে ইসরায়েলের চালানো হামলার সময় ইসমাইল কানি বৈরুতের দক্ষিণের শহরতলি দাহিয়েতে ছিলেন।
তবে এই ইরানি কর্মকর্তা দাবি করেন, হামলার সময় সাফিউদ্দিনের সঙ্গে ইসমাইল কানি বৈঠক করছিলেন না।
হিজবুল্লাহর এক কর্মকর্তা বলেন, গত বৃহস্পতিবার বৈরুতের দক্ষিণের শহরতলি দাহিয়েতে বোমা হামলা চালায় ইসরায়েল। এ হামলার পর তাঁরা সাফিউদ্দিনের খোঁজে যে এলাকাটিতে তল্লাশি চালাবেন, তা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, ইসরায়েল সেই সুযোগ তাঁদের দিচ্ছে না।
হিজবুল্লাহর কর্মকর্তারা বলছেন, তল্লাশি চালানো গেলে বা তল্লাশি সম্পন্ন হলে তবেই তাঁরা সাফিউদ্দিনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারবেন। তিনি বেঁচে আছেন, নাকি মারা গেছেন, তা এখন বলা যাচ্ছে না।
সাফিউদ্দিনকে হিজবুল্লাহর সদ্যপ্রয়াত প্রধান নাসরুল্লাহর সম্ভাব্য উত্তরসূরি বিবেচনা করা হচ্ছিল। নাসরুল্লাহ গত ২৭ সেপ্টেম্বর দাহিয়েতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হন।
ইরানি কর্মকর্তারা বলছেন, ইরান ও হিজবুল্লাহ কোনো পক্ষই ইসমাইল কানির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে না।
২০২০ সালে ইরাকের রাজধানী বাগদাদে মার্কিন ড্রোন হামলায় কুদস ফোর্সের তৎকালীন প্রধান কাশেম সোলাইমানি নিহত হন। তিনি নিহত হওয়ার পর ইসমাইল কানিকে ইরানের রেভল্যুশনারি গাডর্স কোরের বৈদেশিক সামরিক গোয়েন্দা শাখা কুদস ফোর্সের প্রধান করে তেহরান।
লেবাননের দাহিয়েতে ইরানসমর্থিত হিজবুল্লাহর বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল।
ইরানের আরেক কর্মকর্তা বলেন, নাসরুল্লাহ নিহত হওয়ার পর ইসমাইল কানি লেবাননে গিয়েছিলেন। আর সাফিউদ্দিনকে নিশানা করে ইসরায়েলি হামলার পর থেকে ইসমাইল কানির সঙ্গে ইরানি কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করতে পারছে না।
বৈরুতে ইসরায়েলি হামলায় ইসমাইল কানি নিহত হয়ে থাকতে পারেন, এমন খবরের বিষয়ে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাদাভ শশানি বলেন, হামলার ফলাফল তাঁরা এখনো পর্যালোচনা করছেন।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর এই মুখপাত্র বলেন, ইসরায়েল গত সপ্তাহের শেষ দিকে বৈরুতে হিজবুল্লাহর গোয়েন্দা সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছিল। এই হামলার ফলাফল সম্পর্কে যখন সুনির্দিষ্ট তথ্য আসবে, তখন তাঁরা তা জানাবেন। কারণ, সেখানে (হামলার স্থান) কে ছিলেন আর কে ছিলেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
কুদস ফোর্স ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডসের বৈদেশিক শাখা। এই শাখা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ইরানপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে কাজ করে।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর ইসরায়েলি হামলায় নাসরুল্লাহর সঙ্গে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডসের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্বাস নিলফোরুশানও নিহত হন।